Home » » ব্রাক কি

ব্রাক কি

ব্রাক কি

ব্রাক (BRAC) বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত অন্যতম বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে বৃহত্তর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের অঙ্গীকার নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ উন্নয়ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণকার্য পরিচালনায় যে সব সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে জনাব ফজলে হাসান আবেদের প্রতিষ্ঠিত "Save Bangladesh (1971)" অন্যতম। এ সংস্থার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণকার্য পরিচালনা করা হতো। 

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে সিলেটের শাল্লা গ্রামে "Bangladesh Rehabilitation Assistance Committee (BRAC)" নামক সংস্থা গঠন করেন জনাব ফজলে হাসান আবেদ। পল্লীর দরিদ্র এবং শোষিত শ্রেণীর উন্নয়নের প্রয়োজন দীর্ঘ মেয়াদী বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষে ১৯৭৩ সালে ব্র্যাকের নাম পরিবর্তন করে "Bangladesh Rural Advancement Committee (BRAC)" হয়। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশেষত প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্র্যাক অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রেখে চলছে। জনগোষ্ঠীভিত্তিক ব্র্যাকের বিভিন্ন উদ্ভাবনা যথা- ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, আইন সহায়তা, সামাজিক উবুদ্ধকরণ, জীবিকা সংস্থান, অতি দরিদ্রদেরকে সম্পদ হস্তান্তর, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ প্রভৃতির মাধ্যমে সমাজে অধিকার বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের সুপ্ত সম্ভাবনা বিকাশের পথ খুঁজে পেয়েছে। ১৯৭২ সালে ব্র্যাক তার যাত্রা শুরু করে বর্তমানে এর ০১ লক্ষ্য ২০ হাজার কর্মী বিশ্বব্যাপী ১১ টি দেশে ১৩৫ মিলিয়ন মানুষের জীবন সংগ্রামে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। ব্র্যাক এমন এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে যা উন্নয়ন কর্মসূচিকে সামাজিক উদ্যোগের সঙ্গে সমন্বিত করেছে এবং একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান ও সেবাগ্রহীতাদের স্বাবলম্বনের পথে এগিয়ে দিয়েছে। 

ব্র্যাকের ভিশন হলো এমন একটি পৃথিবী গড়ে তোলা যেখানে কোনো প্রকার শোষণ ও বৈষম্য থাকবে না এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ থাকবে। ব্রাকের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত দিক থেকে সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ অসহায়, দুস্থ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারীদের আয়বৃদ্ধিমূলক এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক ও পারিবারিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উৎপাদন ও উন্নয়নকে তরান্বিত করা। 

ব্র্যাকের মৌলিক লক্ষ্য হচ্ছে-

ক. দারিদ্র্য, অশিক্ষা এবং সামাজিক অবিচার দূরীভূত করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের পথকে প্রশস্ত করা; এবং 

খ. বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে বড় মাপের ইতিবাচক পরিবর্তন এনে সমাজের সকল নারী ও পুরুষের সম্ভাবনার বিকাশ সাধন ।

এসব লক্ষ্যে ব্র্যাক'র মূল্যবোধ হলো- সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী মনোভাব, সততা ও নিষ্ঠা, সর্বজনীনতা এবং কার্যকারিতা। ব্র্যাক'র সাধারণ উদ্দেশ্যসমূহ হলো:

১. দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করা;

২. গ্রামীণ মহিলাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে সহায়তা করা;

৩. বড় মাপের ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন করা;

৪. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে চাহিদা সৃষ্টি এবং সম্পদ অর্জন প্রক্রিয়ায় প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করা; এবং

৫. দরিদ্রদের গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নযোগ্য করে তুলতে প্রতিষ্ঠানিক সহায়তা প্রদান ।


ব্র্যাক'র কার্যক্রম

ব্র্যাক মনে করে দারিদ্র্য একটি অভিশাপ এবং এর কারণগুলো একটি আরেকটির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন দিক থেকে সামগ্রিকভাবে দারিদ্র্যকে মোকাবিলা করা জরুরি। সেজন্য ব্র্যাক'র কার্যক্রমকে মোটামুটি পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে; যথা- অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রম, কল্যাণ ও প্রত্যাবর্তনমূলক কার্যক্রম; ক্ষমতায়ন কার্যক্রম; সেবা বিস্তৃতমূলক কার্যক্রম ও সমর্থনমূলক কার্যক্রম। নিচে কার্যক্রমগুলোর বর্ণনা দেওয়া হলো:


অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রম

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় ব্র্যাক নিম্নোক্ত কর্মসূচি পরিচালনা করে-

ক. অতিদরিদ্র কর্মসূচি

ব্র্যাক'র অতিদরিদ্র কর্মসূচি নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি আছে। অর্থনৈতিক পিরামিডের ভিত্তিস্তরে বাস করে যারা, তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অতিদরিদ্র কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অনেক সময় অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী ক্ষুদঋণ ও মুলস্রোতের অন্যান্য দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় আসতে সক্ষম হয় না। এজন্য ২০০২ সাল থেকে ব্র্যাক এই জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধাপ অতিক্রমে সহায়তায় সম্পদ হস্তান্তর, কর্মদক্ষতার উন্নয়ন এবং বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার মতো নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে এ কর্মসূচির ৯৫ শতাংশ সদস্য অতিদরিদ্র্যের আবর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে।

খ. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা

খাদ্য ঘাটতির ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা এবং খাদ্য নিরাপত্তার উপর জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের প্রেক্ষাপটে ব্র্যাক কৃষিখাতে তার কর্মপ্রয়াসকে জোরদার করে তুলেছে। আটটি দেশে পরিচালিত এই কর্মসূচিতে নতুন কৃষি প্রযুক্তির উদ্ভব, আর্থিক সেবা এবং উৎপাদন ও বিপনন পদ্ধতিকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। এই কর্মসূচির লক্ষ্য দ্বিবিধ। প্রথমত: দরিদ্র কৃষকদের বসতাবাড়িভিত্তিক প্রান্তিক কৃষি কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা প্রদান করে বহুবিধ দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্যোগে সহায়তা করা। এসব কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে স্বল্প পরিসরে দল ও সবজির চাষ এবং হাঁস মুরগি ও গবাদি পশু পালন। দ্বিতীয়ত: গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম।

গ.  সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি

ব্র্যাক ২০১১ সালে কৌশলগত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সর্বাধিক প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ইনটিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইডিপি) অর্থাৎ সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করেছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যথা হাওর ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী যারা উন্নয়নের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে তাদের দারিদ্র্য ও বিপন্নতা থাকলে আইডিপি কাজ করছে। ব্র্যাকের মৌলিক সেবা, উন্নত জীবিকার সুযোগ, সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ ও ক্ষমতায়ন, গবেষণা, জ্ঞান ও তথ্যভান্ডার ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে একীভূত ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আইডিপি কাজ করে।

ঘ. মাইক্রোফাইনান্স বা ক্ষুদ্রঋণ

সামাজিকভাবে বঞ্চিত ও বিভিন্ন ক্ষুদ্রগোষ্ঠি মানুষ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরপ্রাপ্ত বাছাইকৃত শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে ব্র্যাক ক্ষুদ্রঋণ সেবা প্রদান করে। বাংলাদেশে এই কর্মসূচির সদস্য সংখ্যা ৭.৭৮ মিলিয়ন এবং ৬৪ টি জেলায় বকেয়ার পরিমাণ ৬৯৩.৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ব্র্যাক বার্ষিক রিপোর্ট,২০১৬)। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়ন, পণ্যের বাজার দর নিশ্চিতকরণ এবং সামাজিক সেবা তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে বাজারের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন এর অন্যতম লক্ষ্য । উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশসহ সর্বমোট ৯ টি দেশে এ কর্মসূচি চালু আছে।

ঙ. ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট

ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচিকে টেকসই করা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদন ও উৎপাদন পরবর্তী বিপণন কাজে সহায়তা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বাণিজ্যিক উদ্যোক্তার লভ্যাংশ ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচিতে স্থানান্তর করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয় ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। আড়ং ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ অন্যতম উদাহরণ। ব্র্যাক ডেইরি, ব্র্যাক কিচেন, ব্র্যাক ফিশারিজ, ব্র্যাক পোলট্রি ইত্যাদিও অন্যতম উদাহরণ। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে যে মুনাফা হয় তার ৫০ শতাংশ উন্নয়ন কর্মসূচিতে বাকী ৫০ শতাংশ পুনর্বিনিয়োগ হয় ।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *