ফোনে বড় ফাইল ট্রান্সফার করবেন কোন উপায়ে
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বড় ফাইল স্থানান্তর করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, বিশেষ করে যদি ইন্টারনেট সংযোগ ধীরগতি বা সীমিত হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যেখানে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সীমিত হতে পারে, সেখানে কার্যকর এবং দ্রুত ফাইল স্থানান্তরের জন্য সঠিক পদ্ধতি নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। এই নিবন্ধে, আমরা মোবাইল ফোনে বড় ফাইল স্থানান্তরের বিভিন্ন পদ্ধতি এবং সরঞ্জাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা আপনাকে সহজে এবং দ্রুত ফাইল স্থানান্তর করতে সহায়তা করবে।
১. ব্লুটুথ ব্যবহার করে ফাইল স্থানান্তর
ব্লুটুথ একটি প্রাচীন এবং সহজলভ্য প্রযুক্তি যা প্রায় সব মোবাইল ডিভাইসে পাওয়া যায়। এটি ছোট ফাইল স্থানান্তরের জন্য উপযোগী, তবে বড় ফাইলের ক্ষেত্রে এটি ধীরগতির হতে পারে।
ব্লুটুথের মাধ্যমে ফাইল স্থানান্তরের ধাপসমূহ:
-
ব্লুটুথ সক্রিয় করুন: উভয় ডিভাইসে ব্লুটুথ চালু করুন এবং সেগুলোকে পেয়ার করুন।
-
ফাইল নির্বাচন করুন: প্রেরণকারী ডিভাইসে স্থানান্তর করতে ইচ্ছুক ফাইলটি নির্বাচন করুন।
-
শেয়ার অপশন নির্বাচন করুন: শেয়ার বা পাঠান বিকল্পে ক্লিক করে ব্লুটুথ নির্বাচন করুন।
-
গ্রহণ নিশ্চিত করুন: গ্রহণকারী ডিভাইসে ফাইল গ্রহণের অনুমতি দিন।
তবে, ব্লুটুথের মাধ্যমে বড় ফাইল স্থানান্তর ধীর হতে পারে এবং এটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
২. ওয়াই-ফাই ডাইরেক্ট ব্যবহার করে ফাইল স্থানান্তর
ওয়াই-ফাই ডাইরেক্ট একটি দ্রুতগতি সম্পন্ন পদ্ধতি যা দুটি ডিভাইসের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে ফাইল স্থানান্তর করতে সক্ষম। এটি ব্লুটুথের তুলনায় অনেক দ্রুত এবং বড় ফাইল স্থানান্তরের জন্য উপযোগী।
ওয়াই-ফাই ডাইরেক্টের মাধ্যমে ফাইল স্থানান্তরের ধাপসমূহ:
-
ওয়াই-ফাই ডাইরেক্ট সক্রিয় করুন: উভয় ডিভাইসে ওয়াই-ফাই ডাইরেক্ট ফিচারটি চালু করুন।
-
ডিভাইস সংযোগ করুন: একটি ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসের সাথে সংযোগ স্থাপন করুন।
-
ফাইল স্থানান্তর করুন: ফাইল ম্যানেজার থেকে প্রেরণ করতে ইচ্ছুক ফাইলটি নির্বাচন করে শেয়ার অপশনে ওয়াই-ফাই ডাইরেক্ট নির্বাচন করুন।
এই পদ্ধতিতে বড় ফাইল দ্রুত স্থানান্তর করা যায় এবং এটি ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয় না।
৩. ক্লাউড স্টোরেজ সেবা ব্যবহার করে ফাইল স্থানান্তর
গুগল ড্রাইভ, ড্রপবক্স, ওয়ানড্রাইভ ইত্যাদি ক্লাউড স্টোরেজ সেবাগুলো ব্যবহার করে বড় ফাইল সহজে স্থানান্তর করা যায়। এই পদ্ধতিতে, আপনি ফাইলটি ক্লাউডে আপলোড করে একটি শেয়ারেবল লিঙ্ক তৈরি করতে পারেন, যা গ্রহণকারীকে পাঠানো যায়।
ক্লাউড স্টোরেজের মাধ্যমে ফাইল স্থানান্তরের ধাপসমূহ:
-
ক্লাউড অ্যাপে লগইন করুন: গুগল ড্রাইভ বা অন্য কোনো ক্লাউড স্টোরেজ অ্যাপে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করুন।
-
ফাইল আপলোড করুন: আপনার ফাইলটি ক্লাউডে আপলোড করুন।
-
শেয়ার লিঙ্ক তৈরি করুন: আপলোড করা ফাইলের জন্য একটি শেয়ারেবল লিঙ্ক তৈরি করুন।
-
লিঙ্ক শেয়ার করুন: গ্রহণকারীর সাথে লিঙ্কটি শেয়ার করুন, যাতে তারা ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারে।
এই পদ্ধতিতে ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয় এবং ফাইলের আকার অনুযায়ী আপলোড ও ডাউনলোড সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
৪. ফাইল শেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ফাইল স্থানান্তর
বাজারে বেশ কিছু ফাইল শেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যা বড় ফাইল দ্রুত স্থানান্তর করতে সক্ষম। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশনের বিবরণ দেওয়া হলো:
৪.১. শেয়ারইট (SHAREit)
শেয়ারইট একটি জনপ্রিয় ফাইল শেয়ারিং অ্যাপ যা ওয়াই-ফাই হটস্পট ব্যবহার করে দ্রুত ফাইল স্থানান্তর করতে সক্ষম। এটি অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, উইন্ডোজ এবং ম্যাক প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ।
বৈশিষ্ট্যসমূহ:
-
উচ্চ গতির ফাইল স্থানান্তর (ব্লুটুথের তুলনায় ২০০ গুণ দ্রুত)।
-
বিভিন্ন ফাইল ফরম্যাট সমর্থন করে।
-
ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন নেই।
ব্যবহারের ধাপসমূহ:
-
উভয় ডিভাইসে শেয়ারইট অ্যাপ ইনস্টল করুন।
-
প্রেরণকারী ডিভাইসে 'Send' এবং গ্রহণকারী ডিভাইসে 'Receive' অপশন নির্বাচন করুন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions