অপারেটিং সিস্টেম কি?
Operate (চালানো) থেকে Operating শব্দের উৎপত্তি। শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো পরিচালনা করা। আর সিস্টেম (System) শব্দের অর্থ হলো পদ্ধতি। অপারেটিং সিস্টেম বলতে কম্পিউটার পরিচালনা পদ্ধতিকে বুঝায়। অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের সমস্ত অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। কম্পিউটার চালাতে প্রয়োজন হয় অপারেটিং সিস্টেম। যেমন: উইন্ডোজ, ইউনিক্স, লিনাক্স, ম্যাক ওএস, পাওয়ার ওপেন প্রভৃতি।
অপারেটিং মূলত একটি সিস্টেম সফটওয়্যার। যে সফটওয়্যার কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয় সাধণ করে কম্পিউটারের সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারগুলো পরিচালনা করে থাকে। অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম সফটওয়্যার যা কম্পিউটার প্রোগ্রামের এক্সিকিউশনকে নিয়ন্ত্র্রণ করে এবং সিডিউলিং, ডিবাগিং, ইনপুট-আউটপুট নিয়ন্ত্রণ, হিসাবরক্ষণ, কম্পাইলেশন, মেমোরি ব্যবস্থাপনা, ডেটা ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ প্রভৃতি কাজ করে থাকে।
প্রাথমিক অবস্থায় অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা হয়েছিল মেইন ফ্রেম কম্পিউটারের জন্য ১৯৫১ সালে। অপারেটিং সিস্টেমটি যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মোটর রিসার্চ ল্যাবরেটরি কর্তৃক আইবিএম কর্পোরেশনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। পার্সোনাল কম্পিউটার বা মাইক্রো কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হতে থাকে ১৯৭১ সাল থেকে। এই অপারেটিং সিস্টেমের নাম ছিল সিপি/এম।
বহুল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমগুলো হলো:
1. MS-DOS-, PC-DOS
2. MS Windows 95, 98, 2000, ME, XP
3. Unix
4. Linux
5. Xenix
6. Mac OS
7. Solaries
8. OS/2 Warp
9. MS Windows NT
10. MS Windows Vista
11. Windows 7 / Windows 8 / Windows 8.1 / Windows 10
অপারেটিং সিস্টেমের সংগঠন:
অপারেটিং সিস্টেম দুই ধরনের প্রোগ্রাম দ্বারা গঠিত। যথা:
১। কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
২। সার্ভিস প্রোগ্রাম
অপারেটিং সিস্টেমের কার্যাবলি:
ইউজার ইন্টারফেস :
অপারেটিং সিস্টেমের ইউজার ইন্টারফেস এমন একটি অংশ যা ব্যবহারকারীর সাথে বিভিন্ন সফটওয়্যারের সংযোগ, সমন্বয় সাধন, পরিচালনা এবং নির্দেশ গ্রহণে সাহায্য করে। তাছাড়া সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন প্রোগ্রাম লোড করা ও কাজ করার সুযোগ তৈরি করে থাকে।
রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট:
এটি কম্পিউটারের বিভিন্ন রিসোর্স, যেমন: ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইসগুলো নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা এবং সমন্বয় সাধন করে।
সিকিউরিটি:
অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের বিভিন্ন রিসোর্সের সিকিউরিটি তথা নিরাপত্তা প্রদান করে। যেমন: কম্পিউটার রিসোর্সকে অবাঞ্চিত ব্যবহারকারীর হাত থেকে রক্ষা করে এবং ডেটা ও ইনফরমেশন চুরি থেকেও রক্ষা করে।
টাস্ক ম্যানেজমেন্ট:
অপারেটিং সিস্টেমের টাস্ক ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম ব্যবহারকারীর কমান্ড গ্রহণ করে এবং তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিপিইউ টাইম স্লাইমকে বিভিন্ন টাস্কের মধ্যে বন্টন এবং কন্ট্রোল করে, যাতে সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।
ফাইল ম্যানেজমেন্ট:
অপারেটিং সিস্টেমের ফাইল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামটি কম্পিউটারের বিভিন্ন ফাইল ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত। যেমন: ফাইল তৈরি, ফাইল ডিলিট, অ্যাকসেস, কপি, মুভ, সংরক্ষণ ইত্যাদি। এছাড়া ফাইল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামটি ডেটা ও প্রোগ্রামিং ম্যানিপুলেশন যেমন, ডেটা আদান-প্রদান, স্থানান্তর ও সংরক্ষণের কাজও করে থাকে।
নেটওয়াকিং:
অপারেটিং সিস্টেমের নেটওয়ার্কিং প্রোগ্রামটি কম্পিউটারের সাথে একাধিক কম্পিউটার, মোবাইল কিংবা অন্যান্য ডিভাইসের সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কাজ করে। ফলে ব্যবহারকারী বিভিন্ন ধরনের সুবিধা, যেমন: ডেটা ট্রান্সফার, রিসোর্স শেয়ারিং ইত্যাদি পেয়ে থাকে।
ইউটিলিটিস:
অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা যেমন: ফাইল ডিফ্রাগমেন্টেশন, ডেটা কম্প্রেশন, ব্যাকআপ, ডেটা রিকভারি, অ্যান্টি-ভাইরাস ইত্যাদি ইউটিলিটিস প্রদান করে।