কম্পিউটার প্রোগ্রামিং?
প্রোগ্রাম হলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো কতকগুলো নির্দেশের সমস্টি যা কম্পিউটারের কাজে সহায়তা করে। আর ভাষা হচ্ছে সেইসব নির্দেশাবলি লেখার সংকেত বা কোড। অর্থাৎ প্রোগ্রামিং ভাষা হচ্ছে বিশেষ ধরনের কোড যা দ্বারা কম্পিউটারের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা যায়। বিশেষ পদ্ধতিতে কীওয়ার্ড বা রিজার্ভড ওয়ার্ড দিয়ে এ ধরনের নির্দেশাবলি লেখা হয়।
কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের কিছু কাজের উদাহরণ নিম্নে দেয়া হল:
আউটপুট স্ক্রীনের ডাটা সম্পূর্ণ মুছে ফেলার জন্য (Clearing the screen)
স্ক্রীনে ডাটা লেখার জন্য (Writing data to screen)
ব্যবহারকারীর নিকট থেকে ইনপুট ডাটা পেতে (Getting user input)
লুপ নির্বাহ করতে (Executing Loops)
পর্দার রং পরিবর্তন করতে (Changing colours)
শব্দ তৈরিতে (Playing Sounds)
ফাইল তৈরিতে (Opening Files) ইত্যাদি।
বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ভাষা আছে। যেমন: সি/সি++, প্যাস্কল, কোবল, ফোরট্রান ইত্যাদি।
প্রোগ্রাম রচনার বিভিন্ন ধাপ:
কোনো সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে, সম্পাদনের অনুক্রমে সাজানো নির্দেশাবলিকে বলা হয় প্রোগ্রাম। কম্পিউটার তৈরির জন্য ৫টি ধাপ রয়েছে। যথা:
১। সমস্যা শনাক্তকরণ এবং সমস্যা বিশ্নেষণ। এই ধাপে ইনপুট সনাক্তকরণ ও আউটপুট সনাক্তকরণে গুরুত্ব দিতে হয়।
২। প্রোগ্রাম ডিজাইন। এই ধাপে অ্যালগোরিদম, ফ্লোচার্ট ও সুডোকোড তৈরি করতে হয়।
৩। প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট বা কোডিং। এই ধাপে অ্যালগোরিদম, ফ্লোচার্ট ও সুডোকোড থেকে কোনো প্রোগ্রামিং ভাষায় প্রোগ্রাম লিখতে হয়। একে প্রোগ্রাম কোডিং বলা হয়। এটি প্রোগ্রামিং এর সবচেয়ে সহজ অংশ।
৪। প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন। এই ধাপে প্রথমে টেস্ট করা হয় এবং টেস্টিং করার পর কোনো ভুলত্রুটি ধরা পড়লে তা সংশোধন করা হয়। পরে ডিবাগিং করা হয়।
৫। প্রোগ্রাম রক্ষণাবেক্ষণ। এই ধাপে প্রোগ্রামিংয়ের ডকুমেন্টেশন করা হয়। বাইরের পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য মাঝেমধ্যে প্রোগ্রামে ছোটখাটো পরিবর্তন করার দরকার হয়। একে রক্ষণাবেক্ষণ বলে।
অ্যালগরিদম:
সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য অনুক্রমিক নির্দেশের সেটকে অ্যালগরিদম বলে। অর্থাৎ প্রোগ্রাম রচনা করার পর্যায়ক্রমিক ধাপগুলোর গঠন নির্ধারণ করে নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্তক্রম তৈরি করে নিতে হয়। এরূপ সিদ্ধান্তক্রমকেই প্রোগ্রামিং ভাষায় অ্যালগরিদম বলা হয়। অ্যালগরিদম হচ্ছে যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি।
প্রবাহ চিত্র (ফ্লো চার্ট) :
ফ্লো চার্ট হচ্ছে অ্যাগরিদম বা সিদ্ধান্তক্রমের ধাপসমূহের চিত্ররূপ। প্রোগ্রামের ধাপগুলো কোন পথে এবং কিভাবে প্রবাহিত হচ্ছে তা চিত্র আকারে উপস্থাপন করা হচ্ছে ফ্লোচার্টের মূল উদ্দেশ্যে। ফ্লোচার্টকে বলা হয় প্রোগ্রামের ভিত্তি।
প্রোগ্রাম কোডিং :
ফ্লোচার্টের বিষয়কে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের ভাষায় রূপান্তরিত করাকে কোডিং বলে।
সুডো কোড :
প্রোগ্রাম রচনা এবং উন্নয়নে সুডোকোড একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। সুডো গ্রিক শব্দ। সুডো শব্দের অর্থ হলো ছদ্ম। প্রোগ্রামিংয়ের সুডোকোড বলতে প্রকৃত প্রোগ্রামিং বোঝানো হয় না। প্রোগ্রামিংয়ের ধরণ এবং কার্যাবলি তুলে ধরার জন্য কিছু সংখ্যক নির্দেশের সমাহারকে সুডো কোড বলে।
ক্রুটি সংশোধন:
প্রোগ্রাম তৈরি করার সময় প্রোগ্রামে কিছু না কিছু ভুল থেকে যায়। প্রোগ্রামের ভুলকে বলে বাগ। প্রোগ্রামিং এর ভুলত্রুটি খুজে বের করে তা দুর করাকে বলে ডিবাগিং।
প্রোগ্রামের ত্রুটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ত্রুটিগুলি হচ্ছে:
১। চিহ্নাদির ত্রুটি বা সিনট্যাক্স ইরর
২। যুক্তি সংক্রান্ত ত্রুটি বা লজিক্যাল ইরর।
৩। নির্বাহজনিত ত্রুটি বা এক্সিকিউশন ইরর।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions