উইন্ডোজ কি
উইন্ডোজ হলো অপারেটিং সিস্টেম।
অর্থাৎ উইন্ডোজ হলো মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক বাজারজাতকৃত একটি শক্তিশালী অপারেটিং সিস্টেম। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর অধীনে অনেকগুলো এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার থাকে যা সে পরিচালনা করে থাকে। এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার গুলো পরিচালনাসহ সকল কাজ মাউস ও কিবোর্ড এর মাধ্যমে খুব সহজে করা যায়।
উইন্ডোজ ভিত্তিক সফটওয়ার-এর সাহায্যে বর্তমানে কম্পিউটারে সকল কাজ করা হয়।
উইন্ডোজ ব্যবহারের সুবিধাগুলো অনেক এবং সেগুলো উপভোগ করতে কম্পিউটার
ব্যবহারকারীকে বার বার আকৃষ্ট করে। উইন্ডোজ অন করার পর ওপেনিং স্ক্রীনে যে
সকল উপাদান দেখা যায় তা হলো - ডেস্কটপ, উইন্ডোজ ও আইকন। চারদিকে বর্ডার
দেয়া সীমাবদ্ধ এ্যাপিস্নকেশন বা ডকুমেন্ট ক্ষেত্রকে উইন্ডোজ বলা হয়। একাধিক
উইন্ডোকে একসাথে ব্যবহারের সুবিধা থেকেই পুরো পদ্ধতির নাম উইন্ডোজ
(Windows) রাখা হয়েছে।
পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহারকারী এবং প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ব্যবহারকারীদের প্রথম পছন্দের তালিকাতে আছে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম। ব্যবহারে সুবিধা এবং নিত্যনতুন ফিচার সমৃদ্ধ হওয়ায় দিন দিন এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। ডস ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম মূলত টেক্সট বেইজ হওয়ায় তা ব্যবহারে বেশ সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই ১৯৮৫ সালে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন প্রথম চিত্রভিত্তিক ইন্টারফেস হিসেবে ব্যবহারকারীদের কাছে উইন্ডোজ ১.০ ভার্সন বাজারে ছাড়ে, পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে পূর্ণাঙ্গ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে বাজারে আসে। দ্রুত এই অপারেটিং সিস্টেম জনপ্রিয়তা পায় যার ভিত্তিতে আজ পর্যন্ত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন ভার্সন বাজারে বের হয়েছে।
উইন্ডোজের কয়েকটি ভার্সন হলো: Windows 98, Windows 2000, Windows XP, Windows NT এবং Windows Vista, Windows 7, Windows 8, Windows 8.1 আর সর্বশেষ Windows 10, মূলত ব্যবহারকারীদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের নতুন নতুন ফিচার সংযুক্ত করে। যেমন:
১। ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা।
২। ইউএসবি এবং ডিভিডি সাপোর্ট
৩। FAT32 এবং NTFS ফাইল সিস্টেম ব্যবহার
৪। ইন্ট্যারাকটিভ গেম ও অনলাইন গেম খেলার সুবিধা।
এছাড়া নতুন নতুন আরো অনেক ফিচার কিছু দিন পরপরই আপডেট করা হয়।
১৯৭৫ সালে বিল গেটস ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পল এলেন মাইক্রোসফট কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। উইন্ডোজ হলো মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক উদ্ভাবিত জনপ্রিয় একটি অপারেটিং সিস্টেম।
নিম্নে উইন্ডোজ এর বিভিন্ন অপারেটিং সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
এমএস ডস (MS DOS):
মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের তৈরি করা প্রথম অপারেটিং সিস্টেম হলো এমএস ডস। এটি ১৬ বিটের একটি অপারেটিং সিস্টেম। এমএস ডস মূলত একটি বর্ণভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম; যা ১৯৮১ সালে প্রথম অবমুক্ত করা হয়। এটি বর্ণভিত্তিক হওয়ায় কিবোর্ড এর মাধ্যমে কমান্ড লিখে কাজ করতে হয়। এই অপারেটিং সিস্টেমে শুধু একক ইউজার এবং একক প্রসেসর সমর্থন করে। এই অপারেটিং সিস্টেমে একসাথে একাধিক প্রোগ্রাম পরিচালনা করা যায় না।
উইন্ডোজ ৯৫ (Windows 95):
উইন্ডোজ ৯৫ হলো একটি ৩২ বিটের অপারেটিং সিস্টেম। ১৯৯৫ সালে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন এটি প্রথম অবমুক্ত করে। উইন্ডোজ ৯৫ এ সর্বপ্রথম Start Menu বা Start Button ব্যবহার করা হয়। এই অপারেটিং সিস্টেমটি বাজারে আসার সাথে সাথেই তৎকালীন সারা বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
উইন্ডোজ ৯৮ (Windows 98) :
উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ৯৫ অপারেটিং সিস্টেমের একটি আপগ্রেড বা উন্নত ভার্সন। এটিও ৩২ বিটের একটি অপারেটিং সিস্টেম।
উইন্ডোজ এনটি/২০০০ ভার্সন (Windows NT/2000 Server) :
NT দ্বারা বোঝানো হয়েছে New Technology, ১৯৯৩ সালে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন Windows NT বাজারে ছাড়ে। পরবর্তীতে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন একে সার্ভার ও ওয়ার্কস্টেশনের কাজের জন্য রূপান্তর করে। তখন এর নামকরণ করা হয় Windows 2000 Server.
উইন্ডোজ এক্সপি (Windows XP) :
উইন্ডোজ এক্সপি হচ্ছে ৩২ বিটের একটি অপারেটিং সিস্টেম। মাইক্রোসফট এর সর্বাধিক জনপ্রিয় সিস্টেম হলো Windows XP অপারেটিং সিস্টেম। Windows XP দ্বারা বোঝানো হয়েছে Windows eXperience । উইন্ডোজ এক্সপিতে একসাথে একাধিক ইউজার তৈরি করে রাখা যায় এবং প্রত্যেক ইউজারের ফাইল, ফোল্ডার, ডকুমেন্ট আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা যায়।
উইন্ডোজ ভিস্তা (Windows Vista) :
উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেমের পর মাইক্রোসফট কোম্পানী বাজারে নিয়ে আসে উইন্ডোজ ভিস্তা নামে নতুন একটি অপারেটিং সিস্টেম। একে উইন্ডোজ এক্সপি এর আপগ্রেড ভার্সনও বলা হয়। এই অপারেটিং সিস্টেমের ৩২ বিট এবং ৬৪ বিট সম্বলিত দুটি সংস্করণ রয়েছে।
উইন্ডোজ ৭ (Windows 7) :
মাইক্রোসফট কোম্পানি ইন্টারফেসে উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেমে আগের সব ভার্সন থেকে সহজ করার মাধ্যমে বিশাল পরিবর্তন আনয়ন করে। উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেমে একটি নতুন ভিউ ফাইল স্টোরেজ স্ট্রাকচার ডেভেলপ করা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে লাইব্রেরি। এর মাধ্যমে একই উইন্ডো হতে বিভিন্ন স্টোরেজ লোকেশনে সহজে অ্যাকসেস করা যায়।
উইন্ডোজ ৮ (Windows 8) :
উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেমের পর বাজারে আসে উইন্ডোজ ৮, এতে মাইক্রোসফটের মেট্রো ডিজাইন ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে মাল্টিপল ইনপুট অপশন, যেমন: উইন্ডোজ ফোন এবং এক্সবক্স এর মতো টাচস্ক্রিন ইনপুট ব্যবস্থা রাখ হয়েছে। উইন্ডোজ ৮ মূলত উইন্ডোজ ৭ এর আপগ্রেড ভার্সন।
উইন্ডোজ ১০ (Windows 10 ) :
উইন্ডোজ ৮ এর পরবর্তী সর্বশেষ সংস্করণ হচ্ছে উইন্ডোজ ১০। এটি এক্সবক্স থেকে পিসি, ফোন, ট্যাবলেট এমনটি ক্ষুদ্র স্মার্টফোনগুলোতেই চলবে। উইন্ডোজ ১০ এ একইসাথে একাধিক কাজ করার সুবিধার্থে যুক্ত হয়েছে মাল্টি ডেস্কটপ ফিচার। এতে যুক্ত হয়েছে নতুন ওয়েব ব্রাউজার Microsoft Edge। এছাড়াও কার্টানা নামে ভার্চুয়াল সহকারী হিসেবে নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এই ফিচারটি পিসিতে কোনো কিছু খুজে দিতে সাহায্য করে।