Home » » টেলিফোন কে আবিষ্কার করেন

টেলিফোন কে আবিষ্কার করেন

First Telephone

টেলিফোন কে আবিষ্কার করেন

দূরবর্তী লোকের সাথে কথা বলার একটি যন্ত্র টেলিফোন। ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল (১৮৪৭-১৯২২) এ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। টেলিফোনে প্রধানত দুটো প্রধান অংশ থাকে, যথা- প্রেরক যন্ত্র ও গ্রাহক যন্ত্র।

প্রেরক যন্ত্র : প্রেরক যন্ত্রে সাধারণত ধাতু নির্মিত একটি পাত থাকে। একে ডায়াফ্রাম বলে। এ পাতের সামনে কথা বললে পাতটি কাঁপতে থাকে এবং এ কম্পন কার্বন কুচি ভর্তি একটি বাক্সের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়। শব্দ না করলে ডায়াফ্রামটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। কম্পনের ফলে কার্বনের কুচিগুলো সংকুচিত হয় এবং এর মধ্যদিয়ে অধিক পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় কার্বন কুচিগুলো প্রসারিত হয়ে আলাদা হয়ে পড়ে। ফলে, কম পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হতে থাকে। মাইক্রোফোন হচ্ছে ডায়াফ্রাম এবং কার্বনকুচির সমন্বয়।

গ্রাহক যন্ত্র : গ্রাহক যন্ত্রে লোহার পাতলা ডায়াফ্রাম থাকে এবং এর সঙ্গে গায়ে তারের কুন্ডলী জড়ানো একটি অশবক্ষুরাকৃতি স্থায়ী চুম্বক থাকে। লোহার পাতটি তারকুন্ডলীযুক্ত চুম্বকের মেরম্নদ্বয়ের সামনে হালকাভাবে সংযুক্ত থাকে। প্রেরক যন্ত্রের মাইক্রোফোনের সামনে কথা বললে এর পাতটি কাঁপতে থাকে। এ কম্পন মাইক্রোফোনে অবস্থিত কার্বনগুলোতে পর্যায়ক্রমে চাপ দেয় এবং পরমুহূর্তে ছেড়ে দেয়। ফলে তড়িৎ প্রবাহের তারতম্য ঘটে। তড়িৎ প্রবাহের তারতম্যের জন্য চুম্বকের শক্তির তারতম্য ঘটে। শক্তি বেশি হলে বেশি জোরে গ্রাহক যন্ত্রের ডায়াফ্রামকে আকর্ষণ করবে। চুম্বকের শক্তি কম হলে কম জোরে ডায়াফ্রামকে আকর্ষণ করবে। সুতরাং প্রেরক যন্ত্রের পাতটি যে কম্পনে কাঁপতে থাকে ঠিক সেভাবেই গ্রাহক যন্ত্রের পাতটিও কাঁপতে থাকে। সুতরাং মাউথ পিসে যেরূপ কথা বলা হয়, ইয়ার পিসেও ঠিক সেরূপ কথা বা শব্দ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ প্রেরক যন্ত্রে ‘হ্যালো' বললে গ্রাহক যন্ত্রে ‘হ্যালো' শোনা যাবে।

টেলিফোনে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত নম্বর লেখা থাকে। নম্বরগুলোর মধ্য হতে গ্রাহকের নম্বরের সংখ্যাগুলি ঘুরিয়ে বা ডায়াল করে এক টেলিফোন সেট থেকে অন্য সেটে দু'জনে কথা বার্তা বলা যায়। টেলিফোনে সংবাদ আদান দু'পদ্ধতিতে হয়ে থাকে, যথা- এনালগ ও ডিজিটাল। এনালগ পদ্ধতিতে শব্দকে সরাসরি তড়িতে পরিণত করে প্রেরণ করা হয়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে তড়িৎশক্তিকে ডিজিটাল সংবাদে রূপান্তর করে। এনালগ পদ্ধতিতে শব্দ আদান-প্রদানে অসুবিধা হয় কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতিতে শব্দ আদান প্রদানে সুবিধা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল টেলিফোন ব্যবস্থা বহুলভাবে প্রচলিত। এটির সুবিধা হল কম্পিউটার ব্যবস্থার সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। বর্তমানে টেলিফোনে সংবাদ আদানের আরো সুবিধা হয়েছে। তারবিহীন টেলিফোনের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। আজকাল মানুষ মোবাইল টেলিফোনে অতি সহজে যে কোনো জায়গাতে যোগাযোগ করতে পারে।

দু'রকম ব্যবস্থার মাধ্যমে শব্দ প্রেরণ করা হয়। একটি হলো এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এবং অন্যটি হলো সরাসরি ডায়ালিং করে। প্রথমটিতে অপারেটরকে নম্বর বললে নির্দিষ্ট স্থানে বিশেষ করে মফস্বল শহরে এমনকি ছোট থানা শহরে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিকে ট্রাঙ্ক কল বলে। দ্বিতীয় পদ্ধতিতে গ্রাহক নিজ দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরাসরি ডায়ালিং করে কথা বলতে পারেন। একে NSD বা নেশানওয়াইড ডায়ালিং বলে। বড় বড় শহর থেকে পৃথিবীর যে কোনো দেশের মানুষের সাথে সরাসরি ডায়ালিংয়ের মাধ্যমে কথা বলা যায়। একে ISD বা ইন্টারন্যাশনাল সাবস্ক্রাইবার ডায়ালিং বলে। টেলিফোন প্রযুক্তি এত বেশি উন্নতি করেছে যে, সমগ্র বিশ্বের সংবাদ এখন মুহূর্তের মধ্যে যে কোনো অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছান সম্ভব।

ষোল বছরের এক তরুণ নাম তাঁর আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল (Alexander Graham Bell)। বোল্টন শহরে এক ধনীর বাড়ীতে গৃহ শিক্ষকের কাজ করতেন।

সেসময় সবেমাত্র টেলিগ্রাফ আবিষ্কৃত হয়েছে, অথচ টেলিগ্রাফের মাধ্যমে কেবলমাত্র খবরের সঙ্কেত পাঠিয়ে মানুষ সন্তুষ্ট থাকতে পারছেনা। চাইছে, মানুষের কন্ঠস্বরকে সোজাসুজি প্রেরণ করতে তাই অনেকেই শুরু করে দিয়েছেন গবেষণা।

তরুন গৃহশিক্ষকটির বিজ্ঞানের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ ছিল এবং টেলিগ্রাফের কথা তিনি ভালভাবেই জানতেন। তাঁরও একদিন ইচ্ছা হল, তারের মাধ্যমে মানুষের কথাকে প্রেরণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা করতে।

কিন্তু আর্থিক অবস্থা তাঁর ভাল ছিল না। অথচ গবেষণার নেশা ছিল প্রবল। অনেক ভেবে চিন্তে যাঁর বাড়ীতে শিক্ষকতা করতেন, একদিন তাঁকেই অনুরোধ জানালেন। 

ভদ্রলোকের মনটি ছিল ভাল। বিনা ভাড়ায় নিচের তলায় একটা ঘর দিলেন, সেই সঙ্গে কিছু টাকাকড়িও। তরুন গ্রাহাম বেল বাজার থেকে কিনে আনলেন বৈদ্যুতিক ব্যাটারী, লোহা ও তামার পাত, নানা ধরনের তার, পেরেক, ইত্যাদি হরেক রকমের জিনিস। ভদ্রলোকের দেয়া টাকা তো নিঃশেষ হলোই, অধিকন্তু নিজের যা ছিল সম্বল-তাও গেল ফুরিয়ে।

দিন যায়। তার গবেষণার এতটুকুও ছেদ পড়ে না। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হয়ে তবুও গবেষণায় বিরাম নেই বা উৎসাহেও এতটুকু ভাঁটা পড়ে না। হয়ত খেয়ালও ছিল না তাঁর। খেয়াল হলো সেদিন যেদিন ঘরের মালিক বললেন ঘর ছেড়ে দিতে।

দিশেহারা হয়ে উঠলেন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। সত্যিই তো কয়েকবছর গত হয়ে গেছে। এতকাল ভদ্রলোকের ঘরের প্রয়োজন ছিলনা, আজ তার দরকার হয়েছে। ঘর ছাড়তেই হবে তাঁকে। কিন্তু কী করবেন তিনি? একমাত্র মনের জোরকে সম্বল করে বোষ্টন শহরে একটি ঘর ভাড়া করে উঠে এলেন। যত বন্ধু-বান্ধব ছিলেন সবাইকে আর্থিক সাহায্যের জন্য জানালেন অনুরোধ। সৌভাগ্যক্রমে লাভ করলেন এক গবেষণা-পাগল বন্ধুকে। প্রচুর টাকা-পয়সার মালিকও ছিলেন বন্ধুটি।

দুই তরুণ পুণরায় নিমগ্ন হলেন গবেষণায়। ততদিনে অবশ্য গ্রাহাম বেল অনেকখানি এগিয়েছিলেন। তাঁর ধারণা হয়েছিল, অতি অল্পকালের মধ্যেই সাফল্য আসবে। এবার সহযোগী লাভ করে কাজটা দ্রুত হতে লাগলো।

একদিন একটি লম্বা তারের দু প্রান্তে পাতলা লোহার পাতকে ভালভাবে বেঁধে, তার উপর তামার তার জড়ালেন। দু-প্রান্তে থাকলেন দুই তরুন গবেষক। তারপর তারের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে এক পাশের একজন কথা বললেন এবং অপরজন শুনলেন। দেখা গেল, শব্দটা বড্ড ক্ষীণ। ব্যাপারটা মনঃপুত না হলেও উৎসাহ লাভ করলেন। নিশ্চিন্ত হলেন এই ভেবে যে, মানুষের কন্ঠস্বরকেও দূরে প্রেরণ করা সম্ভব হবে।

পুণরায় পুরোদমে শুরু হলো গবেষণা। কতদিন পরে সার্থক হলো তাঁদের উভয়ের প্রচেষ্টা। আবিষ্কৃত হলো টেলিফোন। এই টেলিফোনে প্রথম বার্তা বিনিময় করেছিলেন সেই দুই তরুণ একটা বাড়ীর উপরতলা ও নীচের তলা থেকে। 

Graham Bell

টেলিফোন আবিষ্কার করে তিনি কিন্তু জীবন্দশায় আদৌ সুখ্যাতি অর্জন করতে পারেননি। বরং সবাই ব্যঙ্গ করেছিলেন তাঁকে। বাজে খেলনা বলে উপহাস করতেও বাঁধেনি করুর। বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ যাঁরা-তাঁরা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন লোকটা বলে কী মানুষের মুখের কথাকে শ শ মাইল দূরে পাঠিয়ে দেবে। লোকটার মাথায় গোলমাল নেই তো?

টেলিফোন আবিষ্কারের জন্য ১৮৭৬ সালে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল প্রথম মার্কিন পেটেন্টধারী হিসাবে ভূষিত হন।

কিন্তু আজ! টেলিফোন ছাড়া এক মুহূর্ত মানুষের চলে না। বিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদানরূপে স্বীকৃত এবং গ্রাহাম বেলও চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন বিজ্ঞানে।

তবে আরও আগে ১৮৫৪ সালে অ্যান্টোনিও মেউসি টেলিফোনের মতো একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন।

0মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Basic Computer Course

MS Word
MS Excel
MS PowerPoint
Bangla Typing, English Typing
Email and Internet

Duration: 2 months (4 days a week)
Sun+Mon+Tue+Wed

Course Fee: 4,500/-

Graphic Design Course

Adobe Photoshop
Adobe Illustrator

Duration: 3 months (2 days a week)
Fri+Sat

Course Fee: 9,000/-

Web Design Course

HTML 5
CSS 3

Duration: 3 months (2 days a week)
Fri+Sat

Course Fee: 8,500/-

Digital Marketing Course

Facebook, YouTube, Instagram, SEO, Google Ads, Email Marketing

Duration: 3 months (2 days a week)
Fri+Sat

Course Fee: 15,000/-

Class Time

Morning to Noon

1st Batch: 08:00-09:30 AM

2nd Batch: 09:30-11:00 AM

3rd Batch: 11:00-12:30 PM

4th Batch: 12:30-02:00 PM

Afternoon to Night

5th Batch: 04:00-05:30 PM

6th Batch: 05:30-07:00 PM

7th Batch: 07:00-08:30 PM

8th Batch: 08:30-10:00 PM

Contact:

Alamin Computer Training Center

796, West Kazipara Bus Stand,

West side of Metro Rail Pillar No. 288

Kazipara, Mirpur, Dhaka-1216

Mobile: 01785 474 006

Email: alamincomputer1216@gmail.com

Facebook: www.facebook.com/ac01785474006

Blog: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল*

বার্তা*

-->