মোটর গাড়ি কে আবিস্কার করেন
মোটর গাড়ীর আদিরূপ সেই নিকোলাস কুনোর তিন চাকার গাড়ীটি। তাই সরকার সেদিন গাড়ীটিকে বাজেয়াপ্ত করলে বর্তমানে তাকে সযত্নে রাখা হয়েছে ফ্রান্সের যাদুঘরে।
ফ্রান্স নিজের দেশে গাড়ী তৈরীকে নিষিদ্ধ করে দিলেও সংবাদটা ফ্রান্স ছেড়ে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, যাঁরািই উৎসাহী হয়ে উঠেছিলেন তাঁরাই লেগে পড়লেন গাড়ী তৈরি করতে। শেষ পর্যন্ত ডঃ নিকলাউস অটো নামে এক জার্মান ইঞ্চিনিয়ার একদিন বানিয়ে ফেললেন কুনোর মতই আর একটি তিন চাকার গাড়ী। আর এই গাড়ীকে চালাতে গিয়ে কোন দুর্ঘটনা না ঘটায় এবং গবিবেগ বেশী হওয়ায় বহুজনের দৃষ্টি পড়ে গাড়ীটির উপর। ধনীরা চাইলেন এমন একটি গাড়ী পাওয়ার জন্য। আর অটো সাহেবও জুড়ে দিলেন ব্যবসা।
অটোসাহেবের পর সেই তিন চাকার গাড়ীর আরও উন্নতি সাধন করেছিলেন কার্লবেঞ্জ নামে আর এক জার্মানি ভদ্রলোক। কথিত আছে, কার্লবেঞ্জ গাড়ী তৈরি করে নিজে চালাতে সাহসী হননি। ফেলেই রেখেছিলেন ঘরে। একদিন অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাঁর দুই বালকপুত্র গাড়ী চালাতে শুরু করেন এবং গাড়ী দুশ’কিলোমিটার পথ পরিক্রমাকরে ফিরে আসে বাড়ীতে।
শোনা যায়, ছেলেদের বাড়ী ফেরার আগেই বেঞ্চ সাহেব ফিরে এসেছিলেন এবং গাড়ী ও দু-দুজন ছেলেকে ঘরে না দেখে একেবারে পাগলের মত হয়ে উঠেছিলেন। পরে ছেলেরা বাড়ী ফিরলে তিনি নাকি তাদের ভয়ানকভাবে মারধোরও করেছিলেন।
যাইহোক বেঞ্জের গাড়ীর বেঞ্জের গাড়ীর পরীক্ষা একইভাবে হয়ে যায়। পরে মাথা ঠান্ডা হলে বেঞ্জ সাহেব গাড়ীটি সম্বন্ধে নূতন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন এবং অল্পকালের মধ্যেই জুড়ে দেন গাড়ী তৈরির ব্যবসা।
চার চাকার গাড়ী প্রথম তৈরি করেন ডেমলার সাহেব। ইনিও ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এবং জাতিতে ছিলেন জার্মান। প্রথম জীবনে কাজ করতেন অটোসাহেবের কারখানায়। পরে নিজেই শুরু করেন গাড়ীর ব্যবসা। পেট্রোল ইঞ্জিন ব্যবহার করে গাড়ীর গতিকে অনেকখানি বাড়াতে পেরেছিলেন তিনি এবং তাঁর গাড়ী অতি অল্পদিনের ভেতরে দেশ-বিদেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিল। চাহিদা এত বেড়ে উঠেছিল যে, ডেমলার সাহেবের একার পক্ষে সরবরাহ করা সম্ভব হলোনা। তখন ডেমলার সাহেবই ডেকে আনলেন বেঞ্জ সাহেবকে এবং উভয়ের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত হলো বিরাট এক কারখানা। ঐ কারখানা যেসব গাড়ী তৈরি করলো, তাদের নাম দেয়া হলো “মার্সিডিজ বেঞ্জ” গাড়ী। ডেমলার সাহেবের মেয়ে মার্সিডিজ এবং বেঞ্জ সাহেবের নিজের নাম জুড়ে অনুরূপ নামকরণ করা হয়েছিল। আজও এ নাম চলে আসছে।
মোটর গাড়ীর সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সাধন করেছেন “হেনরি ফোর্ড।” একমাত্র অধ্যবসায়ের ফলে অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থা দেখে বিশ্বের এক শ্রেষ্ঠ আবিস্কারক ও ধনীরূপে পরিচিতি হতে পেরেছিলেন। আজকের দিনে বাস, লরি, ট্যাক্সি ইত্যাদি নানা ধরনের যে সব গাড়ী আমরা দেখতে পাই এসব কিছুর রূপকার হেনরি ফোর্ড। তাঁর অসাধারণ কীর্তির জন্য বলা হয় “হেনরি ফোর্ড” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চাকার উপর স্থাপন করে গেছেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions