চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক কে
-হিপোক্রেটিস (খ্রিঃপূঃ ৪৬০-৩৭০)প্রাচীন যুগে গ্রীস দেশে শব ব্যবচ্ছেদ নিষিদ্ধ ছিল। সেই কারনেই মানুষের দেহের অস্থির গঠন ও মাংশপেশীর গঠন প্রত্যক্ষভাবে জানা সম্ভব ছিল না। তবু গ্রীস চিকিৎসক হিপোক্রেটিস বহু দূরারোগ্য ব্যাধি চিকিৎসাপদ্ধতির কথা তাঁর লিখিত বইয়ের প্রবন্ধগুলিতে উল্লেখ করেছেন।
ভাঙা হাড় জোড়া লাগানো, সরে যাওয়া হাড় ঠিকমতো বসানোর জন্য পাতলা কাঠকে কোথায়, কিভাবে দিতে হবে এবং তার ওপরে কিভাবে পটি বাঁধতে হবে সেসব পদ্ধতির কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। তাঁর প্রবন্ধগুলি সুস্পষ্ট ধারণা ছিল।
অস্ত্রপচার কেমন ঘরে করা উচিত, অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি কিভাবে তৈরি করা উচিত, অস্ত্রোপচারের পর কিভাবে ক্ষতের যত্ন নেওয়া উচিত, রোগীর পথ্য কেমন হওয়া উচিত এবং কিভাবে রোগীর পরিচর্যা করা প্রয়োজন সেসব কিছুরই নির্দেশ পাওয়া যায় তাঁর প্রবন্ধগুলিতে। এইসব নির্দেশ বাস্তবধর্মী এবং আধুনিক পদ্ধতির অনেকটাই কাছাকাছি।
সূর্য়কিরণের সাহায্যে নানারকম জটিল রোগ নিরাময় করে তিনি প্রচুর খ্যাতি লাভ করেছিলেন। হিপোক্রেটিস তাঁর প্রবন্ধে লিখেছিলেন, যে কোনো রোগ তা যতই ভয়াবহ ও মারাত্বক হোক না কেন, তার সঙ্গত কোনো প্রাকৃতিক কারণ থাকবেই। অনুসন্ধান বা গবেষণা করে চিকিৎসকদের প্রথমেই কারণটি জানতে হবে, পরে যথোপযুক্ত ওষুধ দিয়ে সেই রোগের চিকিৎসা করতে হবে।
তিনি এও লিখেছিলেন যে চিকিৎসক যদি সঠিকভাবে রোগীর রোগ নির্ণয় করতে চান তবে তাঁকে রোগীর পারিবারিক ইতিহাস, তার পেশা, দৈনন্দিন কাজকর্ম, তার পরিবেশ, শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এসব খুব ভালভাবে জানতে ও বুঝতে হবে।
হিপোক্রেটিস ছিলেন নিষ্ঠাবান চিকিৎসক। তিনি তাঁর ছাত্রদেরও নিষ্ঠাবান করার উদ্দেশ্যে চিকিৎসক জীবন শুরু করার সময় শপথ বাক্য পাঠ করাতেন। শপথ বাক্যে ছাত্রদের বলতে হতো: আমি নিষ্ঠাভরে সারাজীবন ধরে আমার কর্তব্য সম্পাদন করে যাবো এবং আমার পেশার পবিত্রতা অক্ষুন্ন রাখব।
হিপোক্রেটিসের রচনাবলী তাঁর ছাত্ররা খ্রীঃপূঃ তৃতীয় শতাব্দীতে আলেকজান্দ্রিয়ার বিখ্যাত লাইব্রেরীতে সংরক্ষণ করেন। এই রচনাবলীটি সাতাশী খণ্ডে বিভক্ত।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions