অস্ট্রেলিয়ার রাজধানীর নাম কি
অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা।
অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান। এর চতুর্দিক ভারত মহাসাগর এবং প্রশামত্ম মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। এটি একসময় ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। ১৯০১ সালে ছয়টি রাজ্য ভিক্টোরিয়া, তাসমানিয়া, কুইন্সল্যান্ড, নিউ সাউথ ওয়েলস, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় কমনওয়েলথ অব অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা। এর আয়তন ৭৬,৮২,৩০০ বর্গকিলোমিটার। এটি আয়তনে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ তথা দক্ষিণ গোলার্ধের বৃহত্তম দেশ এবং বিশে^ ষষ্ঠ। এদেশের সঙ্গে কোনো দেশের স্থল সীমামত্ম নেই। নিকটবর্তী দেশসমূহের মধ্যে রয়েছে উত্তরে পাপুয়া নিউ গায়ানা, ইন্দোনেশিয়া এবং পূর্ব তিমুর, উত্তর-পূর্বে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং ভানুয়াতোয়া, দক্ষিণ-পূর্বে নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ স্থান কোসকিউসকো (২,২২৯ মিটার) এবং সর্বনিমণ স্থান লেক আইয়র (১৫ মিটার)। দেশটির পূর্ব-পশ্চিমে দূরতব প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে ৩,২০০ কিলোমিটার। উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য ৩৬,৭৩৫ কিলোমিটার এবং স্থল সীমানা ০ কিলোমিটার। দেশটির আঞ্চলিক সমুদ্রসীমা ১২ নটিক্যাল মাইল এবং অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা ২০০ নটিক্যাল মাইল। অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘতম নদী মারে ডার্লিং (২,৩৭৫ কিলোমিটার)।
ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু : অস্ট্রেলিয়ার ভূ-প্রকৃতিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ওয়েস্টার্ন মালভূমি, কেন্দ্রীয় নিমণভূমি এবং পূর্ব পার্বত্য অঞ্চল। ওয়েস্টার্ন মালভূমি প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় বিস্তৃত এবং এটি একটি বিশাল মালভূমি। এখানে কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন পর্বতশ্রেণি উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ মালভূমির বেশিরভাগই মরম্নভূমি। ওয়েস্টার্ন মালভূমি এবং পূর্ব পর্বতমালার মধ্যবর্তী বিস্তৃত অঞ্চলই কেন্দ্রীয় নিমণভূমি। নিমণভূমিটির গড় উচ্চতা ১৫০ মিটার। কম বৃষ্টিপাতের কারণে এর বেশির ভাগ এলাকা শুষ্ক। পূর্ব পাবর্ত্য অঞ্চলটি অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের সমামত্মরাল। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে এটি ‘গ্রেট ব্যারিয়ার রীফ’ নামে পরিচিত।
অস্ট্রেলিয়ার বেশির ভাগ এলাকা শুষ্ক বা আধা শুষ্ক জলবায়ুর অমত্মর্ভুক্ত। বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে এখানকার জলবায়ুকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ক্রান্তীয় সাভানা অঞ্চল, আর্দ্র-পূর্বাঞ্চলীয় উচ্চভূমি, দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলীয় ভূ-মধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল এবং শুষ্ক অভ্যমত্মরভাগ। এখানে বছরে চারটি ঋতু দেখা যায়। যথা-গ্রীষ্মকাল (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি), শরৎকাল (মার্চ-মে), শীতকাল (জুনআগস্ট) এবং বসমত্মকাল (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর)।
জনসংখ্যা : অস্ট্রেলিয়া আয়তনে বিশে^ ষষ্ঠ হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে ক্ষুদ্র একটি দেশ। এখানে বসবাসরত জনসংখ্যা মাত্র ২৪.১ মিলিয়ন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড় ঘনতব ৩ জন। দেশটির জনসংখ্যার বিস্তরণ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল বরাবর ঘনীভূত। সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া।
খনিজ সম্পদ ও শিল্প : অস্ট্রেলিয়া খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। এখানকার উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদ হলো-কয়লা, ইউরেনিয়াম, স্বর্ণ, রৌপ্য, তামা, টিন, সীসা, দস্তা, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম, নিকেল, টাংস্টেন, খনিজ শিলা, বক্সাইট, লৌহ-আকরিক প্রভৃতি। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়ায় শিল্পেও উন্নতি লাভ করেছে। শিল্পসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো-লৌহ ও ইস্পাত, পরিবহন সরঞ্জাম, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাসায়নিক প্রভৃতি।
কৃষি : অস্ট্রেলিয়ার কৃষিভূমির পরিমাণ মোট আয়তনের ৫৩.৪ শতাংশ। এর মধ্যে আবাদী জমির পরিমাণ মাত্র ৬.২ শতাংশ, স্থায়ী ফসল ০.১ শতাংশ এবং পশুচারণ ভূমি ৪৭.১ শতাংশ (সিআইএ, ২০১৭)। বিস্তৃত চারণভূমি থাকায় দেশটি পশুপালনে সমৃদ্ধ। এখানকার অন্যতম কৃষিকাজ দুগ্ধ খামার। খামারগুলো প্রধানত কুইন্সল্যান্ড, ভিক্টোরিয়া এবং নিউ সাউথ ওয়েলস এ গড়ে উঠেছে। অন্যান্য কৃষি ফসলের মধ্যে রয়েছে গম, বার্লি, ইক্ষু, ফলমূল ইত্যাদি। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম কৃষি রপ্তানি পণ্য গম।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions