কম্পিউটার ভাল রাখার উপায়
১. উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন: কম্পিউটারটিকে ধুলাবালিমুক্ত এমন কোন পরিচ্ছন্ন স্থানে রাখুন যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা আছে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এবং সরাসরি সূর্যের আলো ও তাপ প্রবেশ করে এমন স্থান থেকে কম্পিউটারকে দূরে রাখুন। কম্পিউটারের তার, সুইচ ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ যথাসম্ভব শিশু ও গৃহপালিত পশু-পাখির নাগালের বাইরে রাখুন।
২. অপ্রয়োজনীয় ফাইল, অ্যানিমেশন ও ভিজ্যুয়াল এফেক্ট দূর করুন: কম্পিউটারে জমা হওয়া অপ্রয়োজনীয় ফাইল, আকর্ষণীয় অ্যানিমেশন ইত্যাদি কাজের গতি কমিয়ে দেয়। এ গতি ঠিক করতে পারে ক্লিনআপ প্রোগ্রাম। এক্ষেত্রে “Cleaner” অ্যাপিস্নকেশনটি ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি, অপ্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যারগুলো আনইন্সটল করে দিন। প্রয়োজনবোধে অপারেটিং সিস্টেম রিইনস্টল করুন।
৩. আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন: কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাসের সর্বাধুনিক ভার্সন ব্যবহার করুন ও নিয়মিত আপডেট করুন। এরপর নিয়মিত ভাইরাস চেকিং, স্ক্যানিং চালু রাখুন। অন্যথায় ভাইরাসের কারণে কম্পিউটারের গতি কমে যেতে পারে।
৪. বাড়তি জধস লাগান: অল্প খরচে কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর একটি উপায় হলো বাড়তি জধস যোগ করা। এতে প্রায় সব কম্পিউটারের গতিই বেড়ে যায়।
৫. সলিড স্টেট হার্ড ড্রাইভ চালান: হার্ড ড্রাইভের গতির কারণে কম্পিউটারের গতি কমে যেতে পারে। এ সমস্যার সমাধানে কম্পিউটারে সাধারণ হার্ড ড্রাইভের বদলে ব্যবহার করুন সলিড স্টেট হার্ড ড্রাইভ। এটি কম্পিউটার চালু হওয়ার গতিও বাড়াবে। নিয়মিত হার্ড ডিস্ক এরর চেকিং চালু রাখুন।
৬. স্টার্ট আপ সফটওয়্যার কমান: কম্পিউটার স্টার্ট করার সময় যেসব সফ্টওয়্যার চালু হয় সেগুলো লক্ষ্য করুন। এখানে বেশি সফ্টওয়্যার থাকলে তা কম্পিউটারের গতি কমিয়ে দেবে। এজন্য স্টার্ট মেনু থেকে “Msconfig” টাইপ করুন। এরপর “Startup”-এ যান। এখানেই কম্পিউটার চালুর সময়কার সফ্টওয়্যারগুলো পাবেন। তবে এখান থেকে যে কোন কিছু ডিলিট করার আগে ভালোভাবে জেনে নিন। অন্যথায় তা কম্পিউটারের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
দরকারি তথ্যাদি বা ফাইলগুলো ব্যাকআপ সিডি বা ড্রাইভে সংরক্ষণ করা উচিত। কম্পিউটার থেকে হারিয়ে যাওয়া ফাইল পুনরুদ্ধার করতে বা বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটি (ডিস্ক এরর, ফাইল অ্যালোকেশন এরর, ক্লাস্টার চেইন, ব্যাড সেক্টর) চিহ্নিত করতে নরটন ডিস্ক, মেকঅ্যাপি, পিসি টুলস প্রভৃতি ডায়াগনস্টিক সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭. ক্লিন উইন্ডোজ ইনস্টল করুন: কম্পিউটারে যদি অসংখ্য সফ্টওয়্যার ও ভাইরাসের ছড়াছড়ি থাকে তাহলে তার সব সফ্টওয়্যার নতুন করে ইনস্টল করাই ভালো। এজন্য উইন্ডোজের ইনস্টলের সিডি বা ইউএসবি স্টিক সংগ্রহ করুন। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী ইনস্টল করুন। সম্ভব হলে হার্ড ডিস্কের একটি পার্টিশন সম্পূর্ণ ফরম্যাট করে নতুন করে সেখানে উইন্ডোজ ইনস্টল করুন।
৮. ব্রাউজারের ক্যাশ পরিষ্কার করুন: আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারে যদি নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করেন তাহলে এর ক্যাশে বহু ফাইল জমা হতে পারে। এ ফাইলগুলো দূর করার জন্য সেটিংস মেনু থেকে হিস্ট্রিতে যান। এরপর ক্লিয়ার হিস্ট্রিতে ক্লিক করুন।
৯. সার্চ ইনডেস্ক রিফ্রেশ করুন: কম্পিউটারে সংরক্ষিত বিভিন্ন ফাইল দ্রুত সময়ে খুঁজে বের করতে সার্চ ইনডেস্ক রিফ্রেশ করা প্রয়োজন। এজন্য উইন্ডোজের ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টার নিয়মিত (সাধারণ ব্যবহারে সপ্তাহে একবার) চালাতে হবে। এটি সাধারণত কনেট্রাল প্যানেলেই সহজে খুঁজে পাওয়া যায়।
১০. রিস্টার্ট করুন: কম্পিউটার যদি দীর্ঘক্ষণ একনাগাড়ে চলে তাহলে গতি কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সমাধান হলো রিস্টার্ট করা। তবে বিনা দরকারে যখনতখন কম্পিউটার রিস্টার্ট করা বা সরাসরি মেইন সুইচ অফ করা থেকে বিরত থাকুন। যেকোন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে প্রথমে ম্যানুয়ালি শাট ডাউন করুন ও প্রয়োজনবোধে প্রধান বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন।
কম্পিউটার অত্যন্ত সংবেদনশীল যন্ত্র এই অর্থে যে, নিয়মিত ও সুষ্ঠু পরিচর্যার অভাবে এটি কর্মক্ষমতা হারাতে সময় নেয় না। কম্পিউটারের মূল উপাদানগুলোর ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান এবং দুর্বল দিকগুলোর ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ও যত্নশীল থাকলে আপনার কম্পিউটারটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন আরো বেশ কিছুদিন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions