স্নেহ জাতীয় খাবার কি কি
স্নেহ জাতীয় খাবার গুলো হলো যে কোনো মাছের তেল ও যকৃতের তেল, মাংসের চর্বি, মাছের চর্বি, ঘি, মাখন, ডিমের কুসুম এবং উদ্ভিদ তেল সয়াবিন, সরিষা, নারিকেল, তিল, ভুট্টা, বিভিন্ন বাদাম, পাম, তিসি, সূর্যমুখী ইত্যাদি হতে প্রাপ্ত তেল।
স্নেহ পদার্থের শ্রেণিবিভাগ : উৎস অনুযায়ী স্নেহ পদার্থ দুই প্রকার: প্রাণিজ স্নেহ ও উদ্ভিজ্জ স্নেহ। তবে খাদ্য হতে প্রাপ্ত স্নেহ পদার্থকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
১। প্রাণিজ তেল-যে কোনো মাছের তেল ও যকৃতের তেল।
২। প্রাণিজ চর্বি - মাংসের চর্বি, মাছের চর্বি, ঘি, মাখন ডিমের কুসুম, পানির ইত্যাদি।
৩। উদ্ভিদ তেল-সয়াবিন, সরিষা, নারিকেল, তিল, ভুট্টা, বিভিন্ন বাদাম, পাম, তিসি, সূর্যমুখী ইত্যাদি হতে প্রাপ্ত তেল।
স্নেহ পদার্থের কাজ
১| স্নেহ পদর্থের প্রধান কাজ দেহে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করা।
২| স্নেহ পদার্থ দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখে।
৩। দেহে সঞ্চিত হয়ে ভবিষ্যতের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।
৪। ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ বলতা বজায় রাখে।
৫। চর্মরোগ প্রতিরোধ করে।
৬| স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিন-এ, ডি, ই এবং কে শোষণে ফ্যাট সাহায্য করে।
স্নেহ পদার্থের চাহিদা
শিশুদের ও বাড়ন্ত বয়সে খাদ্যে অধিক পরিমাণে ফ্যাট থাকা বাঞ্ছনীয়। প্রাপ্ত বয়স্কেদের ক্ষেত্রে দৈনিক ক্যালরি চাহিদার ১০%-১৫% স্নেহ পদার্থ হতে পূরণ করা উচিত। খাদ্যে ন্যূনতম ১৫ গ্রাম প্রাণিজ ও ৫-১০ গ্রাম উদ্ভিজ্জ ফ্যাট থাকা প্রয়োজন।
স্নেহ পদার্থের অভাবজনিত অবস্থা
দেহে স্নেহ পদার্থের অভাবে চর্মরোগ, ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হওয়া, একজিমা ইত্যাদি হতে পারে। দীর্ঘদিন স্নেহ পদার্থের ঘাটতি হলে দেহে সঞ্চিত প্রোটিনের ক্ষয় হয়। এতে ওজন হ্রাস হয় ও স্বাস্থ্যহানি ঘটে।
স্নেহ পদার্থের গঠন
তেল ও চর্বি জাতীয় খাদ্য উপাদানকে স্নেহ পদার্থ বা ফ্যাট বলা হয়। ফ্যাটি অ্যাসিড ও গিস্নসারলের সমন্বয়ে স্নেহ পদার্থে গঠিত। ফ্যাটি অ্যাসিডেরবৈশিষ্ট্যের উপর স্নেহ পদার্থ বা ফ্যাটের বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে। খাদ্যে প্রায় ২০ ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কঠিন স্নেহ পদার্থগুলোকে চর্বি বলে। যেমন-মাছ ও মাংসের চর্বি। চর্বি হলো সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় তরল স্নেহ পদার্থকে তেল বলে। যেমন সয়াবিন তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি। তেলগুলো অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড। তেল ও চর্বি অর্থাৎ স্নেহ পদার্থ দেহের প্রয়োজনীয় তাপ ও শক্তির ভালো উৎস। ১ গ্রাম স্নেহ পদার্থ হতে প্রায় ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। খাদ্য উপাদানগুলোর মধ্যে শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ফ্যাটই সর্বোচ্চ।
অধিক ফ্যাট গ্রহণের কুফল
অতিরিক্ত স্নেহ জাতীয় পদার্থ গ্রহণ করলে স্থূলতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ইত্যাদি অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions