Home » » নেপচুন গ্রহ আবিষ্কারের কাহিনী

নেপচুন গ্রহ আবিষ্কারের কাহিনী

নেপচুন গ্রহ আবিষ্কারের কাহিনী

নেপচুন গ্রহ (১৮৪৬) -লেভেরিয়ে ও গাল

ইউরেনাস গ্রহ আবিষ্কৃত হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা সূর্য থেকে তার দূরত্ব এবং তার গতি নির্ণয়ের জন্য অঙ্ক কষতে শুরু করলেন, কিন্তু গাণিতিক পদ্ধতিতে নির্ণয় করা গতির সঙ্গে ইউরেনাসের গতির সামান্য অমিল হতে লাগল।

বিজ্ঞানীরা তখন অনেক গবেষণা করে সিদ্ধান্তে এলেন যদি অজ্ঞাত কোনো গ্রহের আকর্ষণ ইউরেনাসের ওপর পড়ে থাকে তবেই এই গতির অমিল ঘটতে পারে। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা অ্যাডামস ও ফরাসী বিজ্ঞানী লেভেরিয়ে অজ্ঞাত গ্রহটি ইউরেনাস থেকে কতদূরে এবং আকাশের ঠিক কোন অংশে তার অবস্থান সম্ভব তা গণনা করতে বসলেন। | ব্রিটিশ বিজ্ঞানী অ্যাডাল্সই প্রথম অজ্ঞাত গ্রহটি কোথায় থাকা সম্ভব তা গণনা করে ফেললেন। তিনি তাঁর গণনার ফলাফল জানিয়ে তাঁর পরিচিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী চ্যালিসকে অজানা গ্রহটি অনুসন্ধান চালানোর অনুরোধ জানালেন। লণ্ডনের মানমন্দিরে তখন আকাশের গ্রহনক্ষত্রাদির ভাল নক্সা ছিল না। জ্যোর্তিবিজ্ঞানী চ্যালিস তাই কেমব্রিজ মানমন্দিরে গিয়ে আগে আকাশের নক্সা তৈরী করতে লাগলেন।

এদিকে লেভেরিয়ে গণনা শেষ করার পর বার্লিনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী গালকে অজানা গ্রহ অনুসন্ধানের অনুরোধ জানালেন। বার্লিন মানমন্দিরে আগে থেকেই আকাশের নিখুঁত নক্সা তৈরী করা ছিল। তাই দূরবীণ দিয়ে ১৮৪৬ সালে একদিন লেভেরিয়ে যে স্থানে অজানা গ্রহটি থাকার সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন সেখানে নক্ষত্রের চেয়ে খানিকটা বড় ম্লান আলাের চাকতির মত গ্রহটিকে দেখতে পেলেন গাল। নতুন গ্রহটি অন্ধকার মহাসমুদ্রের মত মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে রোমের সমুদ্র দেবতার নামানুসারে নাম দেওয়া হল ‘নেপচুন।

এ খবর শুনে বিজ্ঞানী অ্যাডামস ও চ্যালিস একটু কষ্ট পেয়েছিলেন কারণ অ্যাডাম্‌সই প্রথম গণনা শেষ করেছিলেন এবং চ্যালিসও আকাশের নক্সা তৈরীর জন্য দীর্ঘদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। সূর্য থেকে নেপচুনের দূরত্ব ২৭৯.৩ কোটি মাইল তাই খালি চোখে এ গ্রহকে দেখা যায় না। নেপচুন সূর্যকে একবার আবর্তন করতে সময় নেয় ১৬৪ বছর ৬ মাস। নেপচুন পৃথিবীর চেয়ে চার গুণ বড়। নেপচুনের উপগ্রহ দুটি। একটির নাম টাইট্রন। অন্যটি নেরিড।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *