উড়োজাহাজ কে আবিষ্কার করেন
উড়োজাহাজ (১৯০৩)
-উইলবার রাইট (১৮৬৭-১৯১২)
-অরভিল রাইট (১৮৭১-১৯৪৮)
উড়োজাহাজ আবিষ্কারের ইতিহাস
ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে খেলনার কাল্পনিক হেলিকপ্টার পেয়ে দুই ভাই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল তারাও আকাশে উড়ে বেড়াবে পাখীর মত। এর থেকেই শুরু। জার্মান দেশের অটো লিলিয়েনথাল প্রথম তৈরী করলেন গ্লাইডার, এই গ্লাইডার কয়েক হাজার ফুট ওপরে উঠতে পারত এবং হাত পা নেড়ে ইচ্ছামত সেটাকে চালানো যেত। কিন্তু অটো লিলিয়েনথাল উড়োজাহাজ তৈরী করতে পারলেন না। তার আগেই ১৮৯৬ সালে এক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তিনি।
অটো লিলিয়েনথালের গ্লাইডারই উৎসাহিত করে তুলল দুই রাইট ভাইকে। রাইট ভাইদের ছিল একটি প্রেস আর সাইকেল মেরামতির কারখানা। গ্লাইডার কিভাবে তৈরী করা যায় সে বিষয়ে বিশেষ কিছুই জানতেন না তারা। এ জন্য তারা ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটে চিঠি লিখলেন, অনেক তথ্য জানলেন সেখান থেকে। তারপর বিমান বিশেষজ্ঞ অকটেভ ক্যানিউটের কাছেও গেলেন তারা।
অটো লিলিয়েনথালের গ্লাইডার থেকেই তারা অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯০০ সালে, তৈরী করলেন তাঁদের প্রথম গ্লাইডার। এই গ্লাইডারে ছিল একটি ডানার ওপর আরেকটি ডানা। ডানাগুলি ছিল ১৭ ফুট লম্বা। এই ডানা দুটো পাইলটের দেহের সঙ্গে এমনভাবে বাঁধা হত যাতে ইচ্ছামত দেহটাকে নাড়লে ডানা দুটোও নাড়ানো যায় এবং এভাবে গ্লাইডারের ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। গ্লাইডারের মুখকে উঁচু বা নীচু করার জন্য সামনের দিকে উপর নীচে দুটো ছোট পাখা লাগালেন তারা। পাইলটকে সামনে বুকে ভর দিয়ে শুয়ে থাকতে হত এবং সামনের একটা লাঠিকে নাড়িয়ে গ্লাইডারের ভারসাম্য রক্ষা করা হত। কাধের সঙ্গে ডানার যোগ থাকায় কাধ নাড়লে ডানাও এদিক ওদিক নড়ত। রাডার বা হাল লাগিয়ে ডানদিক বদিক চালানো যেত গ্লাইডারটাকে।
এবার তারা ভাবলেন গ্যাস ইঞ্জিন লাগিয়ে বিমান ওড়াবেন। ১৯০৩ সালে তৈরী হল নতুন বিমান ফ্লায়ার। ১৭ ডিসেম্বর এই দু ডানার বিমানকে তারা নিয়ে গেলেন নর্থ ক্যারোলিনার কিটি হকের মাঠে। অরভিল বিমানে উঠে শুয়ে পড়ে ধরলেন বিমানের কন্ট্রোল, ইঞ্জিন চালু করা মাত্রই চার | মাত্র ১২ সেকেণ্ডে মাটি থেকে ১২০ ফুট উচু দিয়ে উড়ে গেল। তারপর উইলবার উঠে ৫৯ সেকেণ্ডে গেল প্রায় ৮০০ ফুট। ফ্লায়ার ১ লম্বায় ছিল ৬.৪ মিটার, ডানা ছিল ১২.২ মিটার লম্বা। ১২ অশ্বশক্তির ইঞ্জিন লাগানো হয়েছিল। গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৮ কিমি। এর পর তৈরী হল ফ্লায়ার-২। কিন্তু সেটি উড়তে পারল না। ফ্লায়ার-১ কে একটু পাল্টে তৈরী ফ্লায়ার-৩ আবার উড়ল আকাশে। এতে একজন বৈমানিক ও একজন বিমানযাত্রী বসার মত জায়গা ছিল। খবর ছড়িয়ে পড়ল দেশ বিদেশে। মানুষের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন সত্যি হল।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions