Home » » ইউনিয়ন পরিষদ

ইউনিয়ন পরিষদ

ইউনিয়ন পরিষদ এর কাঠামো ও কার্যাবলি

ইউনিয়ন পরিষদ

প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে একজন সদস্য নির্বাচিত হবেন। ইউনিয়ন পরিষদের । প্রধান হবেন চেয়ারম্যান। তিনি নির্বাচিত হবেন ইউনিয়ন পরিষদের ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে। ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন। তবে কোনো ওয়ার্ড থেকে একাধিক মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন না। ইউনিয়ন পরিষদের দু'রকম দায়িত্ব রয়েছে।

১. উন্নয়ন সেবা ও কল্যাণমূলক এবং

২. নিরাপত্তা ও সংরক্ষণমূলক 

প্রথমটিতে রয়েছে ১২টি বিষয় আর দ্বিতীয়টিতে একই সংখ্যা। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। নিম্নেলিখিতভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ গুলো তুলে ধরা হলো। যেমন:

উন্নয়নমূলক কাজ : প্রত্যেক ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদকে নানা প্রকার উন্নয়নমূলক কাজ ও প্রকল্প হাতে নিতে হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণত নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করে থাকেন। যেমন:

# রাস্তাঘাট নির্মাণ, মেরামত ও তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা করে 

# রাস্তাঘাটের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে

# রাস্তার উভয় পার্শে বৃক্ষরোপণ করে এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে 

# জনসাধারণের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 

# প্রয়োজন হলে প্রাথমিক চিকিৎসালয় খোলে 

# জনসাধারণের জন্য পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করে এবং এ উদ্দেশ্যে নলকূপ, পুকুর ও দীঘি প্রভৃতি খনন করে; 

# জন্মমৃত্যুর রেজিস্ট্রি করে। 

# বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এলাকার জনগণকে সাহায্য করে 

# অনাথ ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করে 

# কবরস্থান ও শ্মশানঘাটের রক্ষণাবেক্ষণ করে

# ইউনিয়নে পাঠাগার স্থাপন করে

# খেলাধুলার মাঠ ও পার্ক নির্মান করে


কৃষি সংক্রান্ত কাজ : কৃষির উন্নয়নের কাজে ইউনিয়ন পরিষদ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। পল্লী অঞ্চলে কৃষিই মানুষের প্রধান পেশা। সুতরাং তাদের উন্নতমানের বীজ সার ও কীটনাশক ঔষধ সরবরাহ করা ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব। কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকদের বিভিন্নভাবে সাহায্য ও ইউনিয়ন পরিষদ করে থাকে। প্রয়োজনে পঞ্চবার্ষিকী ও বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেও ইউনিয়ন পরিষদ কৃষির উন্নতির চেষ্টা করে। 

রাজস্ব সংক্রান্তকাজ : ইউনিয়নের জনগণের নিকট থেকে বিভিন্ন ধরনের রাজস্ব সংগ্রহ করে ইউনিয়ন পরিষদ সরকারকে সাহায্য করে। স্থানীয় যে সকল কর সেগুলো ইউনিয়ন পরিষদ আদায় করে। তাছাড়া সরকারি রাজস্ব ধার্যের বিবরণ প্রস্তুত করে এবং | সেই ভিত্তিতেই সরকার কর ধার্য করে।

শান্তিরক্ষা সংক্রান্তকাজ : প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদ তার নিজস্ব এলাকায় সর্বোতভাবে শান্তিও শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করে। এজন্য সরকার নিয়োজিত চৌকিদার ও দফাদারগণ গ্রামে থাকে। তাছাড়া প্রয়োজন হলে ইউনিয়ন পরিষদ গ্রামীন পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সংগঠন করে ইউনিয়নে শান্তিরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে। 

বিচার সংক্রান্তকাজ : প্রত্যেকটি ইউনিয়নে একটি সালিসী আদালত আছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এই আদালতের সভাপতি। গ্রামে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যা ও মামলার বিচার এই আদালত করে থাকে। প্রধানত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতাই এসব আদালতের লক্ষ্য। 

সেবামূলক কাজ : ইউনিয়নের কোনো লোক বিপদগ্রস্ত হলে তাকে সাহায্য করা ইউনিয়ন পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্য প্রদান করাও ইউনিয়ন পরিষদের কর্তব্য। অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বা অন্য কোনোভাবে কোনো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তখন তাকে ইউনিয়ন পরিষদ সাহায্য করে থাকে। 

সরকারে সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা : গ্রামের জনগণের সংগে সরকারের যোগাযোগ রক্ষার একমাত্র মাধ্যম হল ইউনিয়ন পরিষদ। ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন সমস্যা ও কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদ উপজেলা পরিষদকে অবহিত করে। তখন ব্যাপারগুলো সরকারে গোচরীভূত হয়। 


প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব খুব বেশি। এই ব্যবস্থা বিভিন্নভাবে মূল্যবান: 

প্রথমত : দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রশাসনিক সমস্যা ও সমাধান কেন্দ্রীয় সরকারকে দেয় বিচিত্র অভিজ্ঞতা। কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সমস্যা সম্পর্কে সুষ্ঠুভাবে অবহিত হতে পারে। 

দ্বিতীয় : স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ জনগণকে বৃহত্তর শাসন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের সুযোগ দান করে। 

তৃতীয় : এই ব্যবস্থা জনগণের স্থানীয় সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সহায়ক। 

চতুর্থ : বর্তমান যুগে বৃহদায়তন রাষ্ট্রে সরকারের কার্যকলাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শাসন ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন। এভাবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা গণতাকি পরিবেশ সৃষ্টির জন্য খুবই প্রয়োজন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *