Home » » ম্যালেরিয়া কি

ম্যালেরিয়া কি

ম্যালেরিয়া / Malaria

ম্যালেরিয়া কি?

হিমোস্পরিডীয় রক্ত পরজীবী (hemosporidian blood parasite) Plasmodium গণ দ্বারা আক্রান্ত কতকগুলো রোগ হলো ম্যালেরিয়া। Anopheles মশার কামড়ে এই রোগ মানুষে সংক্রমিত হয়।

প্রাচীনকাল থেকে ম্যালেরিয়া সম্পর্কিত তথ্য জানা যায়। ডোবা ও নিচু জলাভূমির সাথে এ রোগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ম্যালেরিয়া (খারাপ বাতাস), প্যালুডিজম (paludism-যা জলাভূমির জ্বর হিসাবে পরিচিত) এবং সাম্পেনফাইবার (Sumpfenfiber) জাতীয় রোগ-বালাই এর নামকরণের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে ধরে নেওয়া হয়। পৃথিবী জুড়ে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব, উষ্ণমণ্ডলীয় আবহাওয়ার জনগোষ্ঠীর উপর এর প্রভাব, মৃত্যুহার এবং মানুষে এই রোগ আক্রমণের সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া, ম্যালেরিয়া রোগকে এক বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেছে।

সংক্রমিত মশার কামড়ে মানুষের দেহে শত শত পরজীবী ঢুকে পড়ে। পরে এগুলো আক্রান্ত ব্যক্তির যকৃতে পৌছে যাওয়ার সহজ পথ খুঁজে নেয়। যকৃৎ কোষে বেড়ে ওঠা পরজীবীগুলো সাইজন্ট-এ (Schizonts) পরিণত হয়। এর প্রতিটিতে থাকে কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরজীবী। যকৃৎ থেকে এই পরজীবী নির্দিষ্ট রক্ত প্রবাহের মধ্য দিয়ে লোহিত রক্তকণিকাকে আক্রমণ করে। ইরিথ্রোসাইট-এ (erythrocytes) এদের সময়িক বর্ধন বিভাজন ও তা বিস্ফোরিত হবার ফলে রোগীদেহ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। এই পরজীবী বর্ধনের সাথে সাথে রক্তপ্রবাহ আরো প্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে এবং পরিশেষে এক ধরনের জননকোষে (gametocytes) পরিণত হয়। একটি স্ত্রী মশা রক্ত খাদ্য চোষণের সময়ে আক্রান্ত ব্যাধির দেহ থেকে যে নিষিক্ত জননকোষ (gametes) গ্রহণ করে পরে তা কীটপতঙ্গ বাহকের মধ্য অস্ত্রে পর্যায়ক্রমে স্পোরোগনি রূপে (sporogony) বেড়ে ওঠে যা পরিণামে আক্রমণাত্মক স্পোরোজয়িট (sporozoites) হিসাবে লালাগ্রন্থিতে অনুপ্রবেশ করে। পরে মশার কামড়ের মাধ্যমে পোষক মানব দেহে পৌছে যায়।  

কুইনিন (quinine) ১৯৩০ সাল পর্যন্ত এ রোগের একমাত্র প্রতিষেধক বলে জানা ছিল। ম্যালেরিয়া নিরাময়ের ক্ষেত্রে কতকগুলো কৃত্রিম রাসায়নিক যৌগ চিকিৎসা এবং প্রতিষেধক (prophylaxis) হিসাবে ১৯৩০ সাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। এর মধ্যে অ্যাটাব্রাইন (atabrine), ক্লোরোকুইন (chloroquine), প্রিমাকুইন (primaquine), প্যালুড্রিন (paludrine) এবং অন্যান্য যৌগ রয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ম্যালেরিয়া নির্মূল করার বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়। ডিডিটি (DDT) এবং অন্যান্য কীটনাশক ব্যবহার করে গ্রিস, ইতালি ইত্যাদি দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *