Home » » নিউট্রিনো কি

নিউট্রিনো কি

নিউট্রিনো কি?

নিউট্রিনো কি

নিউট্রিনো (Neutrino) একটি মৌলিক বস্তুকণা যাকে গ্রীক অক্ষর v(নিউ) দিয়ে চিহ্নিত করা হয়, যার স্থির-ভর শূন্য এবং বৈদ্যুতিক আধান শূন্য। এটাকে লেপটন হিসাবে শ্রেণিকরণ করা হয়। নিউট্রিনোই একমাত্র মৌলিক কণা যার শুধু দুর্বল বা ক্ষীণ বিক্রিয়া রয়েছে। সুতরাং ক্ষীণ বলের আলোচনায় নিউট্রিনোর ভূমিকা অনন্যসাধারণ এবং এ কারণেই এ বিক্রিয়া বৃহৎ ত্বরণযন্ত্রের গবেষণাগারে এবং অন্যত্র প্রধান ভূমিকা পালন করে।

১৯৩০ সালে নিউট্রিনোর অস্তিত্ব অনুমান করা হয়েছিল বিটা ভঙ্গন প্রক্রিয়ায় :

নিউট্রিনো

 আপাতদৃষ্টিতে শক্তি সংরক্ষণহীনতা ব্যাখ্যা করার জন্যে। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত নিউট্রিনো বস্তুকণার অস্তিত্ব পরীক্ষণাগারে প্রমাণ করা যায়নি মুক্ত নিউট্রিনোর বিক্রিয়া পরিবীক্ষণ করে। তারপর v-বিক্রিয়ার সংখ্যাভিত্তিক সূক্ষ্ম পরীক্ষা থেকে এটা আবিষ্কার করা হয় যে আসলে দু'ধরনের নিউট্রিনো আছে—বিটাভঙ্গন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ইলেকট্রন নিউট্রিনো v. এবং পাই-মেসন বা পায়ন ভঙ্গন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত মিউয়ন নিউট্রিনো। নিউট্রিনোহীন যুগল বিটাভঙ্গনের অস্তিত্বহীনতা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় যে ve এবং তার প্রতিকণা ve একই কণা নয়। সুতরাং বিশ্বাস করা হয় যে চারটি সম্পূর্ণ আলাদা নিউট্রিনো রয়েছে:

নিউট্রিনো

১৯৭০ সালের শেষের দিকে আর একটা নতুন ভারি আহিত  লেপ্টন আবিষ্কৃত হয়, টাউ যা আগের পরিচিত আহিত লেপ্টন ইলেকট্রন এবং মিউয়নএর সমগোত্রীয়। আজকাল আমরা দুটো অতিরিক্ত ভারি নিউট্রিনোর অস্তিত্বে বিশ্বাস করি, টাউনিউট্রিনো  এবং তার প্রতিকণা পায়ন-ভঙ্গন প্রক্রিয়ায় কৌণিক ভরবেগ সংরক্ষণ থেকে প্রমাণ  করা যায় যে, নিউট্রিনোর ঘূর্ণন সংখ্যা হলো , এককে। কিছু কিছু পরীক্ষণলব্ধ উপাত্ত আছে এবং তাত্ত্বিক চিন্তাও আছে যে নিউট্রিনোগুলোর অন্তত কয়েকটির ভর শূন্য নয় বরং তা সসীম যদিও অতিক্ষুদ্র। এই সম্ভাবনার বিশ্বসৃষ্টি জনিত মৌলিক তাত্ত্বিক তাৎপর্য রয়েছে কেননা জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, বিশ্বে অত্যন্ত বিশাল সংখ্যায় নিউট্রিনো আছে এবং নিউট্রিনোর ভর যদি শূন্য না হয় তাহলে বিশ্বের সামগ্রিক ভরের তাৎপর্যপূর্ণ ভগ্নাংশ ঐ ভর থেকেই আসবে।

কোয়ান্টাম বলবিদ্যার নিয়ম অনুসারে নিউট্রিনোর মতো একটি ঘূর্ণন বিশিষ্ট বস্তুকণার ঘূর্ণন তার গতির দিকে অথবা উল্টোদিকে  বিন্যস্ত থাকবে। এই দুই অবস্থাকে বলা হয় হেলিসিটি অবস্থা যথাক্রমে ডানহাতি এবং বামহাতি হেলিসিটি। সুতরাং সাধারণভাবে এরকম একটি কণার চারটি উপাংশ থাকে—কণা এবং প্রতিকণার ডানহাতি এবং বামহাতি অবস্থা। কিন্তু নিউট্রিনোর দুই-উপাংশের তত্ত্ব এই ভবিষ্যদ্বাণী করে—যা পরীক্ষণ দিয়ে প্রমাণিত—যে চারটি উপাংশের শুধু দুটি উপাংশেরই অস্তিত্ব আছে—বামহাতি নিউট্রিনো এবং ডানহাতি প্রতি-নিউট্রিনো।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *