Home » » মিক্সড ফুড

মিক্সড ফুড

মিক্সড ফুড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

মিক্সড ফুড

টিনের খাবারের কৌটার গায়ে লেবেলটি পড়ে দেখুন। হয়তো লেখা রয়েছে ডিমের সাদা অংশ, ভেজিটেবল অয়েল, ক্রিম তোলা দুধ, লেসিথিন, ডাই গ্লিসারাইড, পিলিন  গ্লাইলি মনোষ্টিয়ারেট, সোডিয়াম সাইট্রেট, লিয়াসিন, রিবোফ্লোভিন। বেশির ভাগ উপাদান সাধারণ খাবারের অন্তর্ভুক্ত নয়, হয়তো আপনি চিনতেও পারছেন না জিনিসগুলো কি, তবুও জানা দরকার। এগুলো খাবারের মেশাল—ভেজাল নয়, মেশাল; হয় ইচ্ছে করেই মেশানো হয় খাদ্য মানের উন্নয়ন, খাদ্যকে আকর্ষণীয়করণ, খাদ্যের প্যাকেজিং ও সংরক্ষণের জন্য অথবা না চাইতেই এসে মিশেছে খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়ায়।

খাবারে মেশাল নতুন কিছু নয়। মানুষ যখন গুহায় বাস করত তখনও সংরক্ষণের জন্য গোশত বা মাছে লবণ মেশাত। লিখিত ইতিহাসের প্রথম থেকেই মেশালের চল দেখা যায়—স্বাদ-গন্ধের জন্য এবং সংরক্ষণের জন্য। যুগে যুগে বিভিন্ন দেশের খাদ্যাভাসে নানা রকম মেশাল জনপ্রিয় হয়েছে। আধুনিক নাগরিক সভ্যতায় খাবারে মেশাল একটি নতুন মাত্রা অবশ্য লাভ করেছে। এখানে নগরবাসীর জন্য খাদ্যকে টাটকা প্রাকৃতিকভাবে সরবরাহ করা যেমন দুরূহ হয়েছে তেমনি নাগরিক অভ্যাসে নানা রকম প্রক্রিয়াকৃত তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপ্ত ও বিবিধ স্বাদ-গন্ধে সমৃদ্ধ খাদ্যের প্রতি আকর্ষণ দেখা দিয়েছে। তার উপর খাদ্যের প্রস্তুতি ও পরিবেশন বড় শিল্পের বিষয়ে পরিণত হবার পর থেকে এর মধ্যে প্রবল প্রতিযোগিতায় খাদ্যকে আরো আকর্ষণীয়, আরো টেকসই করার চেষ্টা প্রত্যেকের মধ্যে জোরদার হয়েছে।

এর ফলে অন্য দিকে সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে এবং সর্বসাধারণের মধ্যে বেশ  কিছু উদ্বেগ। 'আপাতদৃষ্টিতে খাদ্যে সব মেশালের একটি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, একটি আকর্ষণও হয়তো রয়েছে। কিন্তু এর সবকিছু শরীরের জন্য নিরাপদ কি?

রাসায়নিকভাবে মেশাল বস্তুগুলো কি, এবং শরীরের উপর কি প্রভাব রাখে সে প্রশ্নটি উদ্বিগ্ন করার মত বৈকি। পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি খাবারে কেমিক্যাল আছে এই কথাটিতে অবশ্য কারো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। খাবার জিনিসটাওতো কেমিক্যালই। আর আমরা নিজেরাও তাই। কিন্তু প্রাকৃতিক খাবারের মধ্যে যে সব ক্যামিকাল সূক্ষ্ম মাত্রায় থেকে তাকে সমৃদ্ধ করে তোলে, তাই আবার যখন কৃত্রিমভাবে যথেচ্ছভাবে মেশাবার সুযোগ পায় তখন শরীরে নাও সইতে পারে। আবার অন্যদিকে প্রাকৃতিক হলেই খাবারটি আমাদের জন্য সর্বোত্তম এ কথাটিও সর্বত্র সঠিক নয়। অনেক মানুষের প্রাকৃতিক খাবারে কিছু জরুরি জিনিসের অভাব থাকে, সে অভাব পূরণ করতে তা মেশাল হিসেবে খাবারে দিয়ে দেয়াটাই ভাল।

যেমন আয়োডিনের কথাই ধরা যাক। আমাদের খাবারে খুব সামান্য পরিমাণে আয়োডিন থাকাটি অবশ্য প্রয়োজনীয়। নইলে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ঠিক মত কাজ করে না যার একটি ফলশ্রুতি গলগণ্ড রোগ। আয়োডিন সামুদ্রিক খাবারে প্রচুর থাকে। কিন্তু সমুদ্র থেকে বেশি দূরে যে সব জায়গা সেখানকার প্রাকৃতিক খাবারে ঐ সামান্য প্রয়োজনীয় আয়োডিনটুকুরও অভাব থাকতে পারে। আমাদের দেশের কোন কোন অঞ্চলে এ জন্য গলগণ্ড রোগের অধিক প্রভাব দেখা যায়। সাধারণ লবণের সামান্য একটু আয়োডিন মিশিয়ে নিয়ে সে লবণ খাবার অভ্যাস করলে এ ভয় আর থাকে না। আয়োডিন মেশানো লবণ আজকাল বাজারে পাওয়া যায়। কেউ যদি মনে করেন ‘ক্যামিকাল মেশানো জিনিস কি না কি হয়—সেটি ভুল হবে।

উন্নত দেশে গমকে প্রচুর প্রক্রিয়াজাত করে তারপর রুটি বানানো হয়। ফলে এর বেশ কিছু খাদ্য উপাদান—বিশেষ করে ভিটামিন বি (থায়ামিন, রিবোফ্লোবিন, নিয়াসিন) এবং লৌহের ঘাটতি ঘটে। এগুলো পরে ময়দার সঙ্গে মেশাল হিসেবে মিশিয়ে গুণ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেছে সে প্রক্রিয়াজাত করে কোন কোন অংশ ফেলে না দিয়ে পুরো গমের আটার সমপরিমাণ খাদ্যমান অর্জন করা এত মেশাল দিয়েও সম্ভব হয় না।

স্বাদ বৃদ্ধি। লক্ষ্য করে দেখুন অনেক খাবার আপনি পছন্দ করেন মূল খাবারটির জন্য যতখানি নয়, এর মেশালের জন্যই বরং বেশি। আদা, রসুন, দারুচিনি, মিষ্টি, মিন্ট এরকম আপনার প্রিয় স্বাদ গন্ধের মেশালে মোড়া না থাকলে কোন কোন খাবার আপনি হয়তো ছুয়েও দেখবেন না। এর মধ্যে অনেক ক’টি প্রাকৃতিক মসলা সরাসরি মেশানো হয়। অনেক ক’টি প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরণ করা হয়—যেমন ভ্যানিলা আহরণ। আবার কেমিস্টরা অনেক ক্ষেত্রে স্বাদ গন্ধের জন্য দায়ী আসল কেমিক্যালটিকে নিজেরাই সংশ্লেষণ করতে সমর্থ হন, মূল প্রাকৃতিক বস্তুটির শরণাপন্ন না হয়ে । এতে বিকল্পটি অনেক সময় স্বাদে-গন্ধে মূল জিনিসের সঙ্গে আলাদা করা যায় না। তবে প্রাকৃতিক জিনিসের রসায়ন যত জটিল ও সূক্ষ্ম হয়, সংশ্লেষণে তার সবকিছুর আনয়ন প্রায়শ সম্ভব হয় না।

স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক জিনিসের সংশ্লেষিত রূপের প্রতি মানুষের একটি ভীতি আছে--ওটা কৃত্রিম, প্রাকৃতিক নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ভীতি অমূলক। প্রাকৃতিক ও সংশ্লেষিত উভয়ের মূল উৎস একই রাসায়নিক উপাদানে—ভাল হলে উভয়েই ভাল, মন্দ হলেও তাই। যেমন ভ্যানিলা ফ্লেভার প্রকৃতি থেকে আহরণ করেই নেয়া হোক, কিংবা কৃত্রিমভাবে সংশ্লেষিতই করা হোক—তার মূল উৎস ভ্যানিলিন নামক উপাদান। বরং কোন কোন বিজ্ঞানী মনে করেন কৃত্রিমভাবে সংশ্লেষিত বস্তুরই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হবার সম্ভাবনা। কারণ এতে ঐ স্বাদ গন্ধ আনা হয় নূ্যনতম কেমিক্যাল উপাদান ব্যবহার করে প্রকৃতিতে এর গঠন থাকে আরো জটিল।

 এমন কিছু কেমিক্যাল বস্তু রয়েছে যা নিজে তেমন স্বাদু না হলেও অন্য খাবারের স্বাদ বর্ধনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। সাধারণ লবণ সোডিয়াম ক্লোরাইড তার সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ। নিজের লবণাক্ত স্বাদ খুব প্রীতিকর না হলেও এটি খাবারের মিষ্টতা বাড়াতে এবং তিক্ত স্বাদ কমাতে সাহায্য করে। কোন কোন খাবারে তাই বেশি বেশি লবণ ব্যবহারের প্রবণতা আছে—যেমন আলুর চিপসে। সাধারণভাবে অনেক তৈরি খাবারে বেশি লবণ ব্যবহারের অভিযোগ আছে। অথচ উচ্চ রক্ত চাপে অবদান রাখে বলে অতিরিক্ত লবণ পরিহার করা উচিত বলে অনেক চিকিৎসক মনে করেন।  টেস্টিং সল্ট নামে পরিচিত মনোসসাডিয়াম মুটামাইট শহুরে সৌখিন খাবারে খুবই ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে চাইনীজ রেস্তোরাঁর খাবারে এটি থাকাটা স্বাভাবিক। এ জিনিসটি খাবারে অতিরিক্ত থাকলে এমন কিছু উপসর্গের সৃষ্টি হয় যার নামই দেয়া হয়েছে চাইনীজ রেস্তোরা উপসর্গ। ল্যাবোরেটরি পরীক্ষায় পশুদের উপর প্রয়োগ করে এটি মস্তিষ্কে অসাড়তা সৃষ্টি করতে পারে বলে জানা গেছে। তাই আজকাল এ জিনিসটির অধিক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

খাদ্য সংরক্ষণ খাদ্য নষ্ট হয় প্রধানত জীবাণু বা ছত্রাকের কারণে। রুটি ও পনিরে প্রোপাইনিক এসিড অথবা তার সোডিয়াম বা ক্যালসিয়াম লবণ ব্যবহার করা হয় ছত্রাক বিরোধী হিসেবে।

সার্বিক এসিড ও বেনজয়িক এসিডেরও এরকম কার্যকারিতা রয়েছে। সোডিয়াম নাইট্রাইট দিয়ে গোশতকে জারালে সেটি ভাল থাকে, তার গোলাপী রং অক্ষুন্ন থাকে। বিশেষ করে গোশত নষ্ট হয়ে বটুলিজম নামে বিষক্রিয়া ঘটাবার সম্ভাবনা এটি অনেক কমিয়ে দেয়। কিন্তু এই নাইট্রাইটও পেটে গিয়ে নাইট্রোসো যৌগ গঠন করতে পারে যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী যৌগ হিসেবে চিহ্নিত। দেখা গেছে যে সব দেশে মানুষ অধিক পরিমাণে সংরক্ষিত গোশত খেতে অভ্যস্ত সেখানে পাকস্থলীর ক্যান্সারের পরিমাণও বেশি। অথচ শুধু বটুলিজম দূর করার জন্য যেটুকু নাইট্রাইট ব্যবহার করতে হয়, গোশতকে সুন্দর গোলাপী রাখার জন্য ব্যবহার করতে হয় তার দশ গুণ বেশি। তাই ওটা কম ব্যবহার করলেও চলে।

শুকনা খাদ্য ভাল ও সুন্দর রাখার জন্য গন্ধকের ধোয়া বা সালফার ডাই-অক্সাইড দেয়া হয়। সালফার-ডাই অক্সাইড নিঃশ্বাসে গেলে বক্ষব্যাধির কারণ ঘটালেও খাদ্যের সঙ্গে নিলে এর কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া শরীরের উপর দেখা যায়নি। প্রধানত অক্সিডেশনের কারণে তেল বা চর্বি নষ্ট হয়ে যায়। পর পর একটি চেইন রিয়্যাকশনের মাধ্যমে এটি ঘটে বলে একটি অক্সিজেন অণু অনেক ক’টি চর্বি অণুকে ভেঙে দিতে পারে। সেজন্য তৈল-চর্বিযুক্ত খাবার সংরক্ষিত করার জন্য তা বাতাস থেকে মুক্ত রাখতে হয়। সেটি পুরোপুরি সম্ভব নয় বলে এর সঙ্গে এন্টি অক্সিডেন্ট ব্যবহার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এন্টি অক্সিডেন্ট ব্যবহারের ফলে এলার্জি সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। গর্ভাবস্থায় ইদুরকে এটি খাইয়ে রাসায়নিকভাবে অস্বাভাবিক বাচ্চার জন্ম হয়েছে বলে পরীক্ষার কিছু ফল প্রকাশিত হয়েছে। তাই কোন কোন এন্টি অক্সিডেন্টের উপর এখনো কাজ চলছে। এর মধ্যে বিএইচটি নামক একটি বহুল ব্যবহৃত এন্টি অক্সিডেন্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অথচ এই একই জিনিসের বেশ কিছু অন্য উপকারও পাওয়া গেছে যেটি রীতিমত চাঞ্চল্যকর। ইদুরকে বেশি পরিমাণে বিএইচটি খাইয়ে দেখা গেছে যে, তার আয়ুষ্কাল অনেক বেড়ে গেছে—মানুষের বয়সের হিসেবে যাকে ২০ বছর আয়ু বাড়া বলা যায়। মনে করা হচ্ছে যে প্রক্রিয়ায় এটি খাদ্যের বিনষ্টিকরণকে মন্থর করে একই প্রক্রিয়ায় জীবের কোষ অবক্ষয়কেও ধীর করে তোলে। এ ভাবে বুড়িয়ে যাবার কেমিক্যাল প্রক্রিয়া সম্বন্ধে আরো জানা গেলে এরকম পথে হয়তো এক দিন মানুষের আয়ুষ্কালও বাড়ানো যাবে । কোন কোন বিজ্ঞানী বিএইচটিএর অধিক ব্যবহারের সঙ্গে পাকস্থলীর ক্যান্সারের প্রকোপ কমে যাওয়ারও একটি কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করেছেন।


খাদ্যের রং 

কোন কোন খাবার এমনিতেই আকর্ষণীয়ভাবে রঙিন। যে উপাদানের কারণে প্রকৃতিতে খাদ্য রঙিন হয় কৃত্রিমভাবে খাদ্য রাঙাবার জন্য সেটিও ব্যবহার করা যায়। যেমন বেটা কেরোটিন নামে হলুদ রং-বস্তু গাজরকে তার রং দেয় (তাই নাম ক্যারোট)। এই একই জিনিস মাখন, মার্জারিন ইত্যাদিকে হলুদ করতে ব্যবহৃত হয়। আমাদের শরীরে বেটা কেরোটিন ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। তাই এটি রঙ হিসেবেও মেশানো যায়, ভিটামিন বর্ধনের জন্যও মেশানো যায়—এদিক থেকে এ আদর্শ স্থানীয়। প্রাকৃতিক আরো যে সব রঙ উপাদান খাদ্য রাঙাতে ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে রয়েছে বীট, আঙুরের ছিলকা, জাফরান ইত্যাদি। অবশ্য কিছু কিছু রং বস্তু কৃত্রিমভাবে তৈরি-কেমিক্যালসে তৈরি এবং সেগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র অল্প কয়েকটিকে একেবারে নির্দোষ বলা যায়।


মিষ্টিকারক 

চিনি হচ্ছে পলি হাইড্রোক্সি যৌগ। পাশাপাশি কার্বন পরমাণুর সঙ্গে হাইড্রোক্সিল গ্রুপ। আছে এ রকম অনেকগুলো যৌগেরই মিষ্ট স্বাদ রয়েছে। এমনকি এথিলিন গ্লাইকোল বেশ বিষাক্ত হয়েও মিষ্টি। অন্য কিছু পলি হাইড্রোক্সি যৌগও চিনির বদলে মিষ্টিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে যেমন সরবিটল, জাইলিটল। ক্যালোরি মানের দিক থেকে এরা চিনির মত, কাজেই ক্যালোরি কমাতে এদের ব্যবহার করে ফায়দা নেই। কিন্তু এদের একটি বড় সুবিধা হল মুখের মধ্যে চিনির মত এদের অণু ভেঙে যায় না—ফলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার অবদান যোগাতে পারে না। দাঁতের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন চুইংগাম তৈরিতে এরা উপযোগী। অবশ্য অধিক পরিমাণে সরবিটোল বা জাইলিটোল ডাইরিয়া ঘটাতে পারে।

সুলতা কমাবার জন্য বা কোন কোন অসুখে চিনির বিকল্প হিসেবে কৃত্রিম কিছু মিষ্টিকারক ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে স্যাকারিন ও সাইক্লামাইট বহুকাল ধরে পরিচিত। সত্তরের দশকে ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্ক আবিষ্কৃত হবার পর এগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ সম্পর্কে প্রমাণ স্পষ্ট না হওয়াতে এবং অন্য কোন বিকল্প না থাকাতে এদের সম্পর্কে পুরো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। ১৯৮১ সালে এসপারটেম নামে আর একটি মিষ্টিকারককে অনুমোদন দেয়া হয় যা চিনির থেকে ১৬০ গুণ বেশি মিষ্টি।


খাদ্যে বিষাক্ত 

উপাদান যুগে যুগে মানুষ কঠিন অভিজ্ঞতায় জানতে পেরেছে যে তাদের পছন্দসই খাদ্যের মধ্যেও কোন কোনটি বিষ বহন করে। উপাদেয় খাবার মাশরুমের কোন কোনটি বিষাক্ত। বিষাক্ত মাছ খেয়ে বিপদে পড়ার ঘটনা শুধু আমাদের দেশেই ঘটে না। প্রতি বছর ১০০ জনেরও বেশি জাপানি পাফার মাছ খেয়ে মারা যায়। এর কলজে ও ডিম্বাশয়ে বিষ থাকে বলে একে সঠিকভাবে কেটে কুটে নিতে হয়।  সবচেয়ে বিষাক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ক্লোস্ট্রাইডিয়াম বোটুলিনাম নামের জীবাণুর দ্বারা। খাদ্যে স্বাভাবিক এক প্রক্রিয়াতেই এদের বৃদ্ধি ঘটতে পারে। তবে টিনের খাবারে বদ্ধ অবস্থায় এনোরোবিক বা অবাত পরিবেশে এরা খুব দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। টিনের খাবার যদি ভালভাবে জীবাণুশূন্য করে নেয়া না হয় তা হলে এ বিপদ ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়।  খাদ্য পুরো প্রাকৃতিক হলেই যে তা সর্বোত্তম হবে এমন কথা নয়। আবার কোন কিছু মিশাল না দিয়েও প্রক্রিয়াকৃত খাদ্য বিপজ্জনক হতে পারে।


ক্যান্সারের ভয়

খাদ্যের যে সব মেশাল নিষিদ্ধ ঘোষিত নয় তার কোনটি থেকে বিষময়তার ভয় নেই। তবে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান এর মধ্যে রয়েছে কিনা সেটি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া কঠিন। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান প্রাকৃতিক খাবারে যে থাকে না তাও নয়। কাঠ কয়লার আগুনে ঝলসানো গোশতে এমন উপাদান দেখা যায়। দারুচিনির মধ্যে রয়েছে স্যাফ্রোল ক্যান্সার উৎপাদনকারী হিসেবে কোন কোন পানীয়ের মধ্যে যার ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। জমিয়ে রাখা চীনা বাদাম ও শস্যে এক রকম ছত্রাক জন্মাতে দেখা যায় যাতে এ্যাটক্সিন নামক যৌগগুলো থাকে। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে এগুলোর ভয়ানক দুর্নাম রয়েছে। তাই বলে সব কাবাব, চীনা বাদাম, শস্যকে যেমন ভয় করে চলা যাবে তেমনি ভয় করে চলা যাবে না খাদ্যের সব মেশালকে। তবে সাবধানের মার নেই, ক্ষতির সম্ভাবনা কোনটির কতখানি জেনে-শুনে অভ্যাস করা ভাল।

অনাহুত মেশাল অসতর্কতা অনেক সময় খাবারের মধ্যে অনাহুত কেমিক্যালস নিয়ে আসে। অনেক সময় এটি ঘটে দুর্ঘটনাক্রমে। মাঝে মাঝে যখন এটি ধরা পড়ে বড় খবর হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব অগোচরেই থেকে যায়। এভাবে ফলের মধ্যে বিষাক্ত কীটনাশকের, মাছের মধ্যে ডিডিটির, মাছের মধ্যেই পারদঘটিত যৌগের, মুরগীর দেহে ও ডিমে পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল ইত্যাদির অত্যধিক মাত্রায় উপস্থিতি দেখে এক একবার মানুষ শঙ্কিত হয়ে উঠছে। আজকাল বিশেষ পদ্ধতিতে গোশতের জন্য গরু, ভেড়া, মুরগি পালন করা হয়। তাদেরকে এন্টিবায়োটিক, হরমোন ইত্যাদি মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হয় দ্রুত ওজন বৃদ্ধির জন্য। সাম্প্রতিক কালে এসব গোশত খেয়ে মানুষের মধ্যে ওষুধ ও হরমোনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে দেখা গেছে। এসব অনাহুত মেশালও যথেষ্ট দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

খাদ্যের মেশালের পুরো বিষয়টির জন্য যা দরকার তা হল বৈজ্ঞানিক সতর্কতা। ব্যবহৃত সব রকম মেশালের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ভালভাবে পরীক্ষিত হওয়া উচিত। একইভাবে খাবারে কিছু এসে মিশছে কিনা সেই ব্যাপারেও সব সময় বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। এমন একটি ব্যবস্থা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তখনই গড়ে তোলা যাবে যখন সাধারণ মানুষ সচেতন হবেন। তারা যা খাচ্ছেন তার মধ্যে কি আছে এ প্রশ্ন তারা তুলবেন,জানার চেষ্টা করবেন, কিন্তু অনাবশ্যকভাবে ভীতিগ্রস্ত হয়ে ভাল খাবারও পরিহার করবেন না।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *