Home » » সমভূমি কাকে বলে

সমভূমি কাকে বলে

সমভূমি কাকে বলে

সমুদ্র সমতলের প্রায় সম উচ্চতায় সুবিস্তৃত স্থলভাগকে সমভূমি বলা হয়। সমভূমির উপরিভাগ প্রায় সমান বা ক্রমশঃ নিম্ন অথবা সামান্য উঁচু নীচু তরঙ্গায়ীত হয়। সাধারণতঃ সমতলভূমিতে কোন সুবিস্তৃত নিম্নভূমি বা উচ্চভূমি থাকে না।

ভূমির গঠন, ক্ষয়কার্য, সঞ্চয়কার্য, প্রভৃতির ফলে সাধারণত সমভূমির উৎপত্তি হয়। উৎপত্তির দিক হতে পৃথিবীর সমভূমিগুলােকে তিনটি প্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যেমনঃ

১. ক্ষয়জাত সমভূমি (Residual Plains)। | 

২. সঞ্চয়জাত সমভূমি (Depositional Plains) এবং  

৩. উপকূলীয় সমভূমি (Coastal Plain)

১। ক্ষয়জাত সমভূমি : বায়ুপ্রবাহ, সূর্যতাপ, বৃষ্টিপাত, পানি স্রোত, হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা উচ্চভূমি ক্রমশ: ক্ষয় হয়ে সমভুমিতে পরিণত হলে তাকে ক্ষয়জাত সমভূমি বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে ক্ষয়জাত সমভূমি গঠিত হয় বলে ইহাকে নিম্নের কতিপয় শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যেমন:

(ক) নদী বিধৌত সমভূমি : নদীর ক্ষয় কার্যের দরুণ কোন উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমভূমিতে পরিণত হলে তাকে নদী বিধৌত সমভূমি বলা হয়। সাধারণত: নদীর ক্ষয়চক্রের মাধ্যমে এইরূপ ভূমি গঠিত হয়। যেমন: উত্তর আমেরিকার হাডসন উপসাগর তীরবর্তী সমভূমি নদী বিধৌত সমভূমি। 

(খ) হৈমবাহিক সমভূমি : হিমবাহ ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নামার সময় উহার প্রচন্ড ঘর্ষণে অসমতল ভূমিভাগকে ক্ষয় করে অপেক্ষাকৃত নিম্ন ও সমতল ভূমিতে পরিণত করে। এই জাতীয় সমভূমিকে হৈমবাহিক সমভূমি (Glacial Plain) বলে। যেমন : ফিনল্যান্ড, পূর্ব কানাডা ও সুইডেনের বিভিন্ন অঞ্চলের সমভূমি।

(গ) তরঙ্গ কর্তিত সমভূমি : সমুদ্র উপকূল ভাগ তরঙ্গের আঘাতে ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে সমভূমিতে পরিণত হলে তাকে তরঙ্গ কর্তিত সমভূমি (Wave cut Plain) বলে। নরওয়ের উপকূলে এই জাতীয় সমভূমি আছে। (ঘ) মরু সমভূমি : মরু অঞ্চলে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে নিম্নভূমি ভরাট হয়ে সমভূমি গঠিত হলে তাকে মরু সমভূমি বলা হয় । আলজেরিয়া, লিবিয়া ও মিসরে এই জাতীয় সমভূমি দেখতে পাওয়া যায়।


২। সঞ্চয় জাত সমভূমি : নদী, হিমবাহ, বায়ু প্রবাহ প্রভৃতির দ্বারা পলি কাঁকর, বালুকা, ধুলিকণা প্রভৃতি কোন নিম্ন অঞ্চলে সঞ্চিত হতে হতে কালক্রমে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে সঞ্চয়জাত সমভূমি বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা এই জাতীয় সমভূমি গঠিত হয় বলে উহাকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগ করা যায়। 

(ক) পলল সমভূমি : নদীবাহিত পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে ভূ-পৃষ্ঠের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সমভূমি গঠিত হয়। এইরূপ পলি গঠিত সমভূমিকে পলল সমভূমি (Alluvial Plain) বলে। সঞ্চয়ের স্থান অনুযায়ী এই জাতীয় সমভূমি তিন প্রকার হয়।

i) পাদদেশীয় পলল সমভূমি : অনেক সময় পাহাড়িয়া নদীর দ্বারা পলি সঞ্চিত হয়ে পাহাড়ের পাদদেশে নূতন সমভূমি গড়ে উঠে। এরূপ সমভূমিকে পাহাড়ের পাদদেশীয় পলল সমভূমি Piedmont Alluvial Plain) বলে। যেমন : বাংলাদেশের রংপুর ও দিনাজপুরের অধিকাংশ স্থান এই জাতীয় সমভূমি। 

ii) প্লাবন সমভূমি : নদীর পরিণত অবস্থাতে বন্যার সময় পানিস্রোতের সাথে বালি, পলি, কাকর প্রভৃতি উহার গতি পথের দুইদিকে অবস্থিত অপেক্ষাকৃত নিম্নভূমিতে জমা হয়ে যে সমভূমি সৃষ্টি হয় তাকে প্লাবন সমভূমি (Flood Plain) বলে। যেমন : বাংলাদেশের রংপুর ও দিনাজপুরের অধিকাংশ স্থান এই জাতীয় সমভূমি।

(ii) ব-দ্বীপ সমভূমি : নদী বাহিত পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি নদীর মোহনায় সঞ্চিত হতে হতে অগভীর সমুদ্রে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে ব-দ্বীপ সমভূমি (Deltaic Plain) বলে। যেমন : গঙ্গার ব-দ্বীপ সমভূমি পৃথিবীতে সর্ববৃহৎ স্থান অধিকার করেছে।

(খ) হৈমবাহিক সমভূমি : হিমবাহ পর্বতের হিমরেখার নীচে নেমে গলে যাবার ফলে গলিত পানি ধারা কাদা, বালি, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি বহন করে বৃহৎ অঞ্চল ব্যাপি সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে হৈমবাহিক সমভূমি (Glacial Plain) বলে। উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশে এই জাতীয় সমভূমি দেখতে পাওয়া যায় ।

(গ) লােয়েস সমভূমি : নদী, হিমবাহ প্রভৃতির ন্যয় বায়ুও একস্থানের সূক্ষ ধূলিকণা, বালুকা প্রভৃতি বহন করে অন্য কোন স্থানে সঞ্চয় করতে থাকে এবং কালক্রমে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে লােয়েস সমভূমি (Loess Plain) বলে। যেমন : সাহারা মরুভূমির ‘আগ’ এই জাতীয় সমভূমি।

(ঘ) হদ সমভূমি : দীর্ঘকাল নদীবাহিত পলি, বালি, কাঁকর ও অন্যান্য আবর্জনা দ্বারা হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে হ্রদ সমভূমি (Lake Plain) বলে। আমেরিকার বৃহৎহ্রদ সমুহকে ঘিরিয়া হ্রদ সমভূমি দেখা যায়।


৩. উপকূলীয় সমভূমি : ভূ-আন্দোলনের ফলে মহীসোপান বা মহীঢাল ধীরে ধীরে উখিত হয়ে উপকূলবর্তী এলাকায় নিম্ন সমভূমি গঠিত হয়। এই জাতীয় সমভূমিকে সৈকত সমভূমি (Coastal Plain) বলে। যেমন : মেক্সিকো উপসাগরের উপকুলে এই জাতীয় সমভূমি দেখা যায়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *