হুমায়ুনের সাথে বাহাদুর শাহের সংঘর্ষ
সিংহাসনে আরোহণের ছয় মাসের মধ্যে হুমায়ুন কালিঞ্জর দুর্গ অবরোধ করেন। তবে বিহারের শাসনকর্তা মাহমুদ লোদী বিদ্রোহ করলে তিনি অবরোধ উঠিয়ে ফেলেন এবং বিহার আক্রমণ করে মাহমুদ লোদীকে পরাস্ত করেন। হুমায়ুন এ বিজয়ের পর আফগান নেতা শের খান সুরের চুনার দুর্গ অবরোধ করেন। শেরখান হুমায়ুনের বশ্যতা স্বীকার করলে তিনি (হুমায়ুন) আগ্রায় ফিরে আসেন। কিছু দিনের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে শের খান এবং গুজরাটে বাহাদুর শাহ তাদের নিজ নিজ শক্তি বৃদ্ধি করে। এ সংবাদে বাদশাহ শংকিত হয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবর্তে গুজরাটে বাহাদুর শাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন।
গুজরাট কাথিয়াড়ের সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত। হুমায়ুনের আমলে গুজরাটের শাসনকর্তা ছিলেন বাহাদুর শাহ। তিনি ছিলেন উচ্চাভিলাষী এবং হুমায়ুনের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন। আফগান বিদ্রোহীদের আশ্রয়দান এবং সাহায্য প্রদান করে তিনি হুমায়ুনের বিরাগভাজন হন। তাছাড়া মালব, রণথম্ভোর, রাজপুতনা ও চিতোর বিজয়ের পরিকল্পনা করলে তার সাথে হুমায়ুনের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে। হুমায়ুন বিদ্রোহী আমীরদেরকে ফেরত চেয়ে বাহাদুর শাহের সাথে আপোস মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাহাদুর শাহ হুমায়ুনের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। ফলে উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বাহাদুর শাহ যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন আহমদাবাদে। এরপর বাদশাহ হুমায়ুন রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলে বাহাদুর শাহ গুজরাট পুনরুদ্ধার করেন। এ সময়ে পূর্বাঞ্চলে শের খান প্রভাবশালী হয়ে উঠলে বাহাদুর শাহের বিদ্রোহ দমন সম্রাটের পক্ষে আর সম্ভব হয় নি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions