সম্বন্ধ পদ কাকে বলে
বাক্যস্থিত ক্রিয়া পদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকে না এমন কোন পদের সঙ্গে নামপদের যে অব্যবহিত সম্বন্ধ দেখা যায় তাকে সম্বন্ধ পদ বলে।
আমি তোমার বাড়ি যাব। এই বাক্যে যাব ক্রিয়া পদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ‘আমি’ ও ‘বাড়ি' এই দুটি নাম পদের কিন্তু তোমার পদের সঙ্গে ‘যাব’ পদের কোন সম্পর্ক নেই; তোমার পদটি ‘বাড়ির সম্বন্ধীয় এবং বিশেষণজ্ঞাপক। এ কারণে তোমার সম্বন্ধ পদ।
বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে সম্বন্ধ পদের কোন সম্বন্ধ অন্বয় না থাকার কারণে সম্বন্ধ পদ কারক নয়।
সম্বন্ধ পদে ‘র’ বা ‘এর বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
আমি+র>আমার (মা)
তুমি+র > তোমার (ছোট বোন)।
বাড়ি+র > বাড়ির (লোক)।
মাথা+র > মাথার (চুল)
জাফর+এর > জাফরের (গাড়ি)
সাগর+এর > সাগরের (ঢেউ)
খেত+এর > খেতের (চাল)
ডিম+এর > ডিমের (খোসা)
ভোর+এর > ভোরের কাগজ)
স্থান, কাল, দিক ইত্যাদি বাচক কিছু শব্দের সঙ্গে ‘র’ বা ‘এর’-এর পরিবর্তে সম্বন্ধসূচক ‘কার’ >কের ব্যবহৃত হয়।
আজি+কার = আজিকার>আজকের (খবর)
কালি+কার = কালিকার > কালকার> কালকের (কথা)
আগে+কার = আগেকার (দিন)
কখন+কার = কার = কখনকার (ঘটনা)
ভিতর+কার = ভিতরকার (অবস্থা)
পূর্বদিক+কার = পূবদিককার (অংশ)
বাংলা ভাষায় সম্বন্ধ পদের বহুল ব্যবহার রয়েছে। সম্বন্ধ পদ বিশেষণের মতো ব্যক্তির বা বস্তুর বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে থাকে। নানা অর্থে সম্বন্ধ পদের প্রয়োগ হয়।
কয়েকটি নমুনা নিচে দেওয়া হল –
১. অধিকার সম্বন্ধ : বাংলাদেশের জলভাগ, আমার বাড়ি, তোমার ঘড়ি।
২. সামীপ্য : পুকুরের পাড়, সাগরের তীর
৩. অঙ্গ : ঘরের ছাদ, শিশুর দাঁত
৪. কার্যকারণ : আগুনের তাপ, আঘাতের বেদনা
৫. নিমিত্ত : পরের দুঃখ, বিয়ের সাজ
৬, উৎপাদন : জমির ধান, ফার্মের মুরগি।
৭. গুণ সম্বন্ধ : পাকা আমের মিষ্টতা, রান্না গোসতের স্বাদ
৮, হেতু সম্বন্ধ : বিদ্যার বিনয়, রূপের অহংকার
৯, উপাদান সম্বন্ধ : সোনার হার, পিতলের বাটি
১০. ব্যাপ্তি সম্বন্ধ : ইদের ছুটি, দুই দিনের পথ।
১১. ক্রম সম্বন্ধ : সাতের পৃষ্ঠা, বারোর ঘর
১২. কৃতিত্ব সম্বন্ধ : রবীন্দ্রনাথের ‘মানসী', নজরুলের ‘অগ্নিবীণা
১৩. বিশেষণ সম্বন্ধ : সুখের কথা, ভিক্ষার চাল
১৪. অভেদ বা উপমা সম্বন্ধ : হৃদয়ের আসন, শোকের ছায়া।
১৫. কারক সম্বন্ধ :
কর্তা - আমার পড়া
কর্ম - গরিবের সেবা
করণ - লাঠির আঘাত
অপাদান - বাঘের ভয়
অধিকরণ - গ্রামের মানুষ
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions