হযরত আলী রাঃ এর কৃতিত্ব
প্রশাসনিক সংস্কার
হযরত উসমান (রা.) (রা.) শাসনের শেষের দিকে প্রশাসনে উমাইয়াদের যে প্রাধান্য সৃষ্টি হয়েছিল হযরত আলী (রা.) পুনরায় তা ঢেলে সাজান এবং প্রশাসনিক সংস্কার করেন। হযরত উসমান (রা.) এর যুগে অসাধু আমলাদের কারণে প্রশাসনে যেসব দূর্নীতি ঢুকে পড়েছিল সেগুলো দূর করে তিনি হযরত উমর (রা.) এর যুগের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা বহাল রেখেছিলেন এবং তাতে কোন প্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন করেননি। নাযরানের ইহুদিদেরকে উমর (রা.) হিজায থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছিলেন। তারা পুনরায় হিজাযে আগমনের দরখাস্ত করলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
বায়তুল মালের সংরক্ষণ
বায়তুল মালের যথাযথ সংরক্ষণে তিনি সতর্ক ছিলেন। নিজের এবং নিজ পরিবারবর্গ ও নিকটাত্মীয়দের কাজে সরকারী কোষাগারের সাধারণ কোন জিনিসও তিনি ব্যয় হতে দিতেন না। মহানবী (সা.) এর ভৃত্য আবু রাফেকে তিনি বায়তুল মালের তত্ত্বাবধায়ক নিয়োজিত করেছিলেন।
বাজারদর পরিদর্শন
পণ্যসামগ্রীর বাজার দর তিনি মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে দেখতেন। যেন তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে না যায়। দোকানদারদেরকে সঠিক মাপ ও ক্রেতার সাথে ভাল ব্যবহারের পরামর্শ দিতেন।
পাণ্ডিত্য
হযরত আলী (রা.) অসাধারণ স্মৃতিশক্তি এবং পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি কবি, সাহিত্যিক, বৈয়াকরণ ও ন্যায়শাস্ত্রবিদ ছিলেন। তাঁর লিখিত ‘দিওয়ানে আলী’ আজও আরবি সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। তাঁর বক্তৃতা ও অভিভাষণ আরবি ভাষার গৌরবের বস্তু।
উত্তরাধিকার আইন
উত্তরাধিকার আইনের ব্যাপারে তিনি ছিলেন মদীনার অন্যতম বড় পণ্ডিত। বিভিন্ন ধরণের মামলা মুকাদ্দমাতে তাঁর প্রদত্ত রায়সমূহ বিভিন্ন গ্রন্থে সংরক্ষিত আছে। তাসাউফ তথা আত্মশুদ্ধির বিশেষ প্রশিক্ষণ পদ্ধতির মূল উৎস হিসেবে তাঁর বক্তব্যকেই গণ্য করা হয়।
আরবি ব্যাকরণ শাস্ত্রের প্রবর্তক
আরবি ব্যাকরণের ভিত্তি হযরত আলী (রা.)-ই স্থাপন করেছিলেন। তিনি নিজের সাথীদের মধ্য থেকে আবুল আসওয়াদ আদ- দুয়াইলী নামক জনৈক ব্যক্তিকে এ কাজে নিয়োগ করেছিলেন।
বীরত্বের মূর্ত প্রতীক
হযরত আলী (রা.) ছিলেন বীরত্ব ও সাহসিকতার মূর্ত-প্রতীক। তিনি তাঁর অসাধারণ শৌর্য ও সাহসিকতা নিয়ে ইসলামের খিদমতে নিয়োজিত ছিলেন। মহানবী (সা.) জীবদ্দশায় যত যুদ্ধ সংঘটিত হয় তিনি প্রায় সব কটিতেই অংশগ্রহণ করে অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। বদর যুদ্ধে তিনি ছিলেন মুসলিমদের পতাকা বহনকারী। উহুদ, খন্দক, মক্কা বিজয়, হুনায়ন, খায়বর প্রভৃতি যুদ্ধে তিনি অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন।
আসাদুল্লা উপাধি লাভ
তাঁর সামরিক কৃতিত্বের মধ্যে খায়বরের বিখ্যাত কামুস দুর্গ দখল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর অসাধারণ বীরত্বের নিদর্শন স্বরুপ তাঁকে মহানবী (সা.) আসাদুল্লাহ বা আল্লাহর সিংহ' উপাধিতে ভূষিত করেন।
যুলফিকার লাভ
মহানবী (সা.) যুলফিকার নামক তরবারী তাকে উপহার দান করে বলেন- ‘যুলফিকার’ সমতুল্য কোন তরবারী নেই এবং আলীর সাথে কোন বীর যোদ্ধার তুলনা করা যায় না।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions