৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। তীব্র গণআন্দোলনের মুখে এরশাদ সরকারের পতন হয়। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর নিকট উপ-রাষ্ট্রপতি মওদুদ আহমেদ পদত্যাগ করেন। তাঁর স্থলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে উপ-রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ করা হয়। উপ-রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ এর নিকট রাষ্ট্রপতি এরশাদ পদত্যাগ করেন। এরশাদ এর পদত্যাগের পর উপ-রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিন জোট কর্তৃক প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মদ রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন ।
রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেন, তাঁর মূল কাজ হবে অতি শীঘ্ৰ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। রাষ্ট্র পরিচালনা ও নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য তিন জোট কর্তৃক মনোনীত ৩১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্য হতে ১৭ জনকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি। ১৯৯০ সালের ১৪ ডিসেম্বর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ হিসেবে ঠিক করা হয়।
নির্বাচন অনুষ্ঠান
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সর্বমোট ৭৬টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে । নির্বাচনে ৩০০টি আসনে ২৭৮৭ জন প্রতিদ্বন্ধীকে ৫২.৩৭ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল:
১৯৯১ সালের নির্বাচনের ফলাফল নিম্নে দেওয়া হল-
নির্বাচন মূল্যায়ন
এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতি অন্ধকার থেকে আলোতে পদার্পণ করে। বাংলাদেশে সামরিক শাসনামলের নির্বাচনগুলোতে ভোট জালিয়াতি, সন্ত্রাস, কেন্দ্র দখল মুখ্য হয়ে উঠেছিল । সেদিক থেকে ১৯৯১ সালের নির্বাচন একবারেই ব্যতিক্রম ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ইতিহাসের প্রথম নির্বাচন দেশে-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমেও প্রশংসিত হয়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions