চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এরশাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন অব্যাহত থাকে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে এরশাদের পদত্যাগের দাবি জোরালো হতে থাকে ।
১৯৮৭ সালের নভেম্বরে বিরোধী দলগুলো জাতীয় সংসদ থেকে একযোগে পদত্যাগ করলে, এরশাদ ২৭ নভেম্বর দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। ৬ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হয়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ধার্য করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পরে তা পিছিয়ে ৩ মার্চ করা হয়। বিদ্যমান অবস্থায় এই নির্বাচনের প্রতি সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের কোন সমর্থন ছিল না। তাই তারা নির্বাচন বয়কট ও প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আন্দোলন দুর্বল করার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ করা হয় ।
নির্বাচন অনুষ্ঠান
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বয়কট করায় এ নির্বাচনে জনগণের আগ্রহ ছিল না। মাত্র ৯টি নাম সর্বস্ব দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। এতে জাতীয় পার্টি ২৫১টি, আ. স. ম. আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন সরকার অনুগত সম্মিলিত বিরোধী দল ১৯টি আসন লাভ করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ৩টি এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করে। এ নির্বাচনে মাত্র ৯৮৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৫৪.৯৩% ।
নির্বাচন মূল্যায়ন
স্বৈরশাসক এরশাদ যেকোন উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। তাই দু বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আবার জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করে। কিন্তু এ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশ গ্রহণ ১৯৮৬ সালের নির্বাচন থেকে কম ছিল। তেমন কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সাজানো একটা সমন্বিত প্রতিদ্বন্দ্বী জোট তৈরি করা হয়। বিরোধী দলবিহীন এক তরফাভাবে জাতীয় পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions