তাম্র যুগ
তাম্রযুগ: খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দের শেষদিকে ইউরোপে এবং নিকট প্রাচ্যে তাম্র যুগের সূচনা ঘটে। তাম্রযুগে প্রবেশের মধ্য দিয়ে নগরসভ্যতার সূচনা হয়। তবে তাম্রযুগে পাথরের ব্যবহারও চলমান ছিল। তামার ব্যবহার ছিল সভ্যতার নতুন সংযোজন। এ অবস্থাকে তাম্রপলীয় যুগ নামে আখ্যায়িত করা হয়। মানুষের প্রথম ব্যবহৃত ধাতু হল তামা। ধারণা করা হয় যে, কৃষিযুগে মাটির হাঁড়ি-পাতিল পোড়াতে গিয়ে প্রথম তামা আবিষ্কৃত হয়। কারণ মালাকাইট (তামার আকর) পুড়লে তামা গলে আলাদা হয়ে বেরিয়ে আসে। প্রাচীন মিশর, সিরিয়া ও অ্যাসিরিয়ার অধিবাসীরা ব্যাপকভাবে তামার ব্যবহার জানত। বস্তুত সুমেরের নগরসভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছিল তামা ব্যবহারের মধ্যদিয়ে। তবে তামার দুষ্প্রাপ্যতা এবং এর কিছুকাল পর ব্রোঞ্জযুগের আগমনে তাম্রযুগ দীর্ঘায়িত হয়নি।
পাথরের স্থলে তামার হাতিয়ার ও তৈজসপত্রের ব্যবহারের কারণে শ্রমের উৎপাদনশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে মানব সভ্যতায় প্রথম অর্থনৈতিক শ্রেণিবিভাগ সৃষ্টি হয়। তামা বিক্রি করে কিছু লোক প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে শ্রেণিবিভক্ত সমাজে শক্তিশালী রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয় এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের বিকাশ ঘটে। প্রাচীন মিশরের পিরামিড যুগের সভ্যতা ও সিন্ধুসভ্যতা তাম্র ও ব্রোঞ্জযুগের সভ্যতা ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions