Home » » প্রত্নতত্ত্ব কি

প্রত্নতত্ত্ব কি

প্রত্নতত্ত্ব কি

খনন কাজের মাধ্যমে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন সভ্যতার বিভিন্ন উপাদান উদ্ধার ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে প্রত্নতত্ত্ব (Archaeology)। Archaeology শব্দটি গ্রিক Archaeos এবং Logia শব্দ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ হচ্ছে প্রাচীন অধ্যয়ন। প্রাচীন সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতির উৎস অনুসন্ধানে প্রত্নতত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রত্নতত্ত্বের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, লিখিত উপাদান ছাড়াও কেবল ব্যবহার্য সামগ্রী বা অলিখিত উপাদান থেকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া সভ্যতার নানা বৈশিষ্ট্য উদঘাটন করা যায়। উইলিয়াম কার্নিংটনকে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে মনে করা হয়।

অক্সফোর্ড লিভিং ডিকশনারি অনুসারে, খনন কাজের মাধ্যমে ইতিহাস ও প্রাক-ইতিহাসকে অধ্যয়ন করা এবং সময়ের সাথে সাথে টিকে থাকা বিভিন্ন দ্রব্য ও অস্তিত্বশীল বস্তুর বিশ্লেষণকে প্রত্নতত্ত্ব বলা হয়

সোসাইটি ফর আমেরিকান আর্কিওলজির মতে, প্রত্নতত্ত্ব হচ্ছে প্রাচীন মানব ইতিহাসের টিকে থাকা উপাদানসমূহের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান। 

নৃবিজ্ঞানী হোবেল (Hoebel) তাঁর Anthropology: The Study of Man গ্রন্থে বলেছেন, প্রত্নতত্ত্ব আদিম মানুষের পরিত্যক্ত দ্রব্যসামগ্রী এবং তাদের ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদসহ বস্তুগত সংস্কৃতির যেসব দিক এখনো উদ্ধার হয়নি সেগুলো উদ্ধারে সচেষ্ট।

ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী ই.বি. টেইলর বলেন, প্রত্নতত্ত্ব অতীতের ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন (Archaeology is the study of remains of the past)। নৃবিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে প্রত্নতত্ত্বের অধ্যয়ন শুরু হলেও এটি এখন স্বতন্ত্র শাস্ত্র (Discipline) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বিকাশমান এ শাস্ত্রটির অনেকগুলো শাখা রয়েছে। যেমন, প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব, ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব, পরিবেশ প্রত্নতত্ত্ব, প্রত্ন-উদ্ভিদবিদ্যা, জলগর্ভস্থ প্রত্নতত্ত্ব, জাদুঘর অধ্যয়ন, ঐতিহ্য ব্যবস্থাপনা, নগর ব্যবস্থাপনা, লোকপ্রত্নতত্ত্ব ইত্যাদি।

প্রাচীন কোনো নিদর্শন উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে খনন কাজ পরিচালনা করার আগে ভৌগোলিক এলাকা সনাক্তকরণের জন্য রিমোট সেন্সিং ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও মাঠ জরিপ পদ্ধতি, এরিয়াল জরিপ, ভৌগোলিক জরিপ পদ্ধতিও ব্যবহৃত হয়। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য খনন কাজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। খননের মাধ্যমে প্রাপ্ত উপাদানের বয়স কার্বন ডেটিং পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হয়।


প্রত্নতত্ত্বের উৎসসমূহ (Sources of Archaeology)

প্রত্নতত্ত্বের ভিত্তি হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিক খনন কার্যক্রম। খননকাজের মাধ্যমে অতীত-ইতিহাস উন্মোচিত হয়। খননের মাধ্যমে প্রাপ্ত হাড়, মাথার খুলি, ব্যবহার্য সামগ্রী, অস্ত্র, যন্ত্রপাতি, তৈজসপত্র, আসবাবপত্র ইত্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাচীন যুগের মানব সমাজ ও তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে কার্যকর ধারণা পাওয়া যায়। বহুবিধ উৎস থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উদঘাটন করা যায়। যেমন:

১) লিখিত উৎসঃ খনন কাজের মাধ্যমে প্রাপ্ত সাহিত্য, দলিল-দস্তাবেজ, লিপি প্রভৃতি প্রত্নতত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত। এসব থেকে প্রাচীন সমাজ ও সভ্যতার সময়কাল, শাসকবর্গ, তাদের শাসনকার্য, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে কার্যকর ধারণা লাভ করা যায়।

২) মৌখিক উৎসঃ প্রাচীন লোককথা, গল্প, কেচ্ছা-কাহিনী, রূপকথা ইত্যাদি প্রত্নতত্ত্বের মৌখিক উৎস হিসেবে স্বীকৃত। যুগ যুগ কিংবা বংশ পরম্পরায় এসব মৌখিক উৎস সমাজে চলমান থাকে। সাধারণত বয়োজ্যেষ্ঠদের নিকট থেকে এগুলো পরবর্তী প্রজন্মে হস্তান্তরিত হয়।

৩) রাজপ্রাসাদ ও মন্দির বা ধর্মশালা : খনন কাজের মাধ্যমে প্রাপ্ত নগরীর রাজপ্রাসাদ, মন্দির বা ধর্মশালা প্রত্নতত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এর মাধ্যমে প্রাচীন সমাজের নির্মাণ কৌশল, রুচিবোধ এবং ধর্মবোধের নিদর্শন স্পষ্টত প্ৰতীয়মান হয়।

৪) শিলালিপি, চিত্রলিপি গুহাচিত্রঃ প্রাচীন যুগে কাগজ ছিলো না। মানুষ তার মনের কথা, প্রয়োজনীয় বার্তা, তথ্যাবলী, নির্দেশ, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি পাথর, পর্বতগাত্র, তামারপাত্র ইত্যাদিতে বিশেষ লিপির মাধ্যমে লিখে রাখত। বিশেষ করে রাজ্য শাসন প্রণালী সম্পর্কীয় বিষয়াবলি লিপির মাধ্যমে কঠিন পর্বতগাত্রে খোদাই করে রাখা হতো।এগুলো থেকে রাজ্য শাসনের কাল, রাজ্যের বিস্তৃতি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত হতে পারেন।

৫) মুদ্রা, দেবদেবীর মূর্তি: মুদ্রার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজার রাজত্বকাল, শাসকদের নাম ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়। দেবদেবীর মূর্তি থেকে মানুষের জীবনের ধর্মীয় চিন্তাধারায় এবং শিল্পে নিপুণতার পরিচয় পাওয়া যায়। এগুলো থেকে মানুষের ক্রমবিবর্তনের ধারা এবং সাধারণ মানুষের জীবন দর্শনও উপলব্ধি করা যায় ।

৬) আসবাবপত্র ও হাতিয়ার : আসবাবপত্র ও হাতিয়ার দেখে যুগকে চিহ্নিত করা যায়। যেমন- প্রস্তর যুগ, লৌহ যুগ, তাম্র যুগ, ব্রোঞ্জ যুগ ইত্যাদি। সে যুগের মানুষ যে অস্ত্র ব্যবহার করতো তা নির্মিত হতো এসব ধাতুর মাধ্যমে। বিভিন্ন সময়ের আসবাবপত্র ও হাতিয়ার দেখে মানব সমাজের পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

৭) স্মৃতিফলক: প্রত্নতত্ত্বের উৎস হিসেবে স্মৃতিফলকের গুরুত্ব আছে। স্মৃতিফলক দেখে অতীত জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারা যায়। আর.এল ব্রাইন স্মৃতিফলকের গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। তার মতে, “স্মৃতিফলক জীবনধারার সাক্ষী, সমাজচিত্রের দর্পন এবং মানুষের পেশা ধারণার অবলম্বন।”

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *