Home » » কিয়াস কি

কিয়াস কি

কিয়াস কি

কিয়াস আরবি শব্দ । অর্থ হলো পরিমাপ করা, অনুমান করা, তুলনা করা ইত্যাদি। অর্থাৎ- শাব্দিকভাবে কিয়াস হলো কোন বস্তুকে অন্য বস্তুর সাথে তুলনা করা ।

কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে শরীআতের যেসব হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়, শাখা-প্রশাখার মধ্যে ঐ হুকুমের কারণ পাওয়া গেলে শাখায় মূলের অনুরূপ হুকুম প্রদান করাকে শরী'আতের ভাষায় কিয়াস বলা হয় ।

ইমাম আবু হানিফা (র) বলেন, “কিয়াস হল আইনের বিস্তৃতি। মূল আইন যখন সমস্যার সমাধানে যথেষ্ট না হয়, তখন মূল আইন থেকে ইল্লাতের মাধ্যমে নতুন বিধি আহরণ করতে হয়। আর তখন যে আইনের সম্প্রসারণ হয় তাই কিয়াস।”

মূলত মূল আইনকে শাখায় তুলনা করেই নতুন আইনের জন্ম হয়। আর এটিই হল কিয়াস ।

উদাহরণ : কুরআন মাজীদের মাধ্যমে ইসলামি শরীআতে মদ্যপানকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ হলো 'নেশা' । অনুরূপভাবে কিয়াসের মাধ্যমে গাঁজা, আফিম, হিরোইন ইত্যাদি নেশা জাতীয় জিনিসকে ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে। ২.২ কিয়াসের উৎপত্তি

ইসলামি আইন শাস্ত্রের চতুর্থ ভিত্তি হলো কিয়াস। কোন সমস্যার সমাধানে যখন কুরআন, হাদিস ও ইজমা কোন নির্দেশনা না পাওয়া যায় তখন ইসলামি পণ্ডিতগণ কিয়াসের আশ্রয় নিয়ে উদ্ভূত সমস্যাটি সমাধান করেন।

প্ৰমাণ :

দৃষ্টান্তস্বরূপ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) যখন তাঁর বিশিষ্ট সাহাবী হযরত মুআয ইবন জাবাল (রা)-কে ইয়ামানের শাসনকর্তা মনোনীত করে পাঠান, তখন তিনি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, বিচার সংক্রান্ত ব্যাপারে কোন নতুন সমস্যার উদ্ভব হলে তিনি (মুআয) কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন? তিনি বলেন, তিনি কুরআনের অনুসরণ করবেন। তিনি তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “যদি কুরআনে সুস্পষ্ট নির্দেশ না থাকে?” তখন মুআয (রা) উত্তর দিলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (স)-এর সুন্নাহর (হাদিসের অনুসরণ করবেন। আর রাসূল (স)-এর সুন্নাহর দ্বারা ফায়সালা করতে না পারলে তিনি তাঁর নিজস্ব বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করবেন। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) তাঁর জবাবে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন। এবং তাঁর জন্য দুআ করেন।

অন্য একটি হাদিসে আছে, হযরত মুহাম্মদ (স) আবু মূসা আল-আশআরী রা. কে বললেন, “আল্লাহর কিতাব (কুরআন) অনুযায়ী বিচার কর। তোমার যা প্রয়োজন, তা যদি এতে না থাকে তবে তেমাদের নবী (স)- এর সুন্নাহ হতে খোঁজ কর। সেখানেও যদি না পাও তখন নিজের মতামত ব্যক্ত কর।”


কিয়াসের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব

ইসলাম একটি যুক্তিভিত্তিক গতিশীল জীবনব্যবস্থা। জীবন জিজ্ঞাসার সাথে সম্পর্কিত সকল সমস্যার সমাধান ইসলাম প্রদান করছে। হযরত মুহাম্মদ (স) জানতেন সময়ের বিবর্তনে মানব সমাজে নানারকম সমস্যার উদ্ভব ঘটবে। সে সব সমস্যা হতে তাঁর উম্মতকে বাঁচানোর জন্য তিনি সমাধানের পথ হিসেবে ইজমা ও কিয়াসের পথ খুলে রেখেছেন ।

রাসূল (স)-এর ইন্তিকালের পর আসমানী বার্তা প্রেরণ বন্ধ হয়ে যায় । তাছাড়া মুসলিম সাম্রাজ্যের পরিসীমা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। নব বিজিত মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে নতুন সংস্কৃতি ও সভ্যতার পরিচয় ঘটে। ফলশ্রুতিতে নতুন নতুন নানা সমস্যার উদ্ভব হয় । সাহাবাগণ কুরআন ও সুন্নাহ অনুসারে বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করে নতুন সমস্যার সমাধান দিতে থাকেন। প্রথম হিজরি শতাব্দীর শেষ দিকে ফিক্হ শাস্ত্রের বিকাশ ঘটে। ফকিহগণ কুরআন ও হাদিসের নিরিখে চিন্তা ও গবেষণার সমন্বয় ঘটাতেন। সম্ভবত ইমাম শাফিঈ প্রথম ব্যক্তি যিনি উসূলে ফিকহের সংকলন চেষ্টা করেন এবং ইসলাম ধর্মীয় ও বিচার ব্যবস্থায় কিতাব, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন- “কিয়াসের ব্যবহার সে সময় করা যাবে যখন কিতাব, সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা কোন সমস্যার সমাধান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।”

সুতরাং কুরআন, হাদিস, ইজমা দ্বারা সমাধান বের করতে না পারলে কিয়াসের আশ্রয় নিতে হবে।


কিয়াসের-এর নীতমালা

মহানবীর (স) ইন্তিকালের পর সাহাবীগণ কুরআন-সুন্নাহর সাথে সাথে কিয়াসের অনুসরণে নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করতেন। পরবর্তীকালে ইসলামের মাযহাব চতুষ্টয়ের ইমামগণও কিয়াস প্রয়োগ করতেন। কিয়াস এমন সব সমস্যার সমাধান করে যা কুরআন-হাদিসে স্পষ্ট উল্লেখ নেই। 

ইমামগণ নিম্নলিখিত নীতিমালার ওপর লক্ষ রেখে কিয়াস গ্রহণ করতেন-

(ক) কিয়াস কুরআন-হাদিস ও ইজমার পরিপন্থী হবে না ।

(খ) কুরআন-হাদিস ও ইজমা দ্বারা প্রবর্তিত কোন আইনের মূলনীতি বিরোধী কোন আইন তৈরি করা কিয়াসের আওতা বহির্ভূত।

(গ) কিয়াসের মূলনীতি মানুষের জ্ঞানের পরিসীমার মধ্যে থাকতে হবে।

(ঘ) যে সকল সমস্যার সমাধান কুরআন, হাদিস ও ইজমা দ্বারা করা হয়েছে, সে সকল বিষয়ে কিয়াস প্রযোজ্য নয়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *