ভূমিকম্প কেন হয়
পৃথিবীতে খরা, বন্যা,ঘূর্ণিঝড় সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে চলেছে। এর মধ্যে ভূমিকম্পই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। কারণ এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের চেয়ে অনেক বেশি। মাটির নিচ থেকে হঠাৎ করেই যেন কেঁপে ওঠে পৃথিবী। কোন পূর্ব সংকেতের সুযোগ না দিয়েই ভূমিকম্প মুহূর্তেই লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে একটি পুরো জনপদ।
ভূমিকম্প কি
ভূ-অভ্যন্তরের শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে। এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এরূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে। কম্পন-তরঙ্গ থেকে থেকে শক্তির সৃষ্টি হয়, তা ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এ তরঙ্গ ভূ-গর্ভের কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উৎসস্থল থেকে তা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্প সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে একাদুই মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। মাঝে মাঝে কম্পন এত দুর্বল হয় যে, তা অনুভব করা যায় না । কিন্তু শক্তিশালী ও বিধ্বংসী ভূমিকম্পে সম্পদ ও প্রাণের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ভূমিকম্প কেন হয়
বিশেষজ্ঞরা তাঁদের গবেষণায় ভূমিকম্পের কয়েকটি কারণ সনাক্ত করেছেন। ভূমিকম্পের সেই কারণগুলো নিম্নে দেয়া হলো:
১। ভূপৃষ্ঠে উপরের স্তরে অনেকগুলো প্লেট আছে। এগুলো আবার অনেকগুলো সাবপ্লেটে বিভক্ত। এগুলো সবসময় নড়াচড়া করছে এবং একটার সঙ্গে আরেকটার ঘর্ষণ হচ্ছে। এই ঘর্ষণের ফলে সৃষ্টি হয় ভূমিকম্পের।
২। আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ও গলিত লাভা উৎক্ষিপ্ত হবার কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
৩। পাহাড় বা উঁচু স্থান থেকে বৃহৎ পরিসেরে শিলাচ্যুতির কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।
৪। কোনো কোনো এলাকায় ভূ-পৃষ্ঠের গভীর থেকে অতিরিক্ত পানি বা তেল ওঠানোর ফলে ভূ-পৃষ্ঠের অবস্থানের তারতম্য ঘটে। ফলে ভূমিকম্প হয়।
৫। ভূ-ত্বক তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়ে ফাটল ও ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।
৬। নানা কারণে ভূ-গর্ভে বাষ্পের সৃষ্টি হয়। এ বাষ্প ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে তা ভূ-ত্বকের নিম্নভাগে ধাক্কা দেয়, ফলে প্রচণ্ড ভূ-কম্পন অনুভূত হয় এবং ভূমিকম্প হয়।
৭। প্রকাও হিমবাহ পর্বতগাত্র থেকে পড়ে গিয়ে ভূ-পৃষ্ঠ কেঁপে ওঠে ও ভূমিকম্প হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions