Home » » অধিক জনসংখ্যার প্রভাব

অধিক জনসংখ্যার প্রভাব

অধিক জনসংখ্যার প্রভাব

বর্তমানে বিশ্বের খুব কম দেশেই কাম্য জনসংখ্যা রয়েছে। কিছু দেশে প্রয়োজনের তুলনায় কম জনসংখ্যা থাকলেও অধিকাংশ দেশে জনসংখ্যা কাম্য জনসংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি। জনসংখ্যাস্ফীতির পরবর্তী পর্যায়কে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। জনসংখ্যা বিস্ফোরণের ভয়াবহতা সম্পর্কে ১৯৭৭ সালে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট ম্যাকনামারা বলেছিলেন, “পারমাণবিক যুদ্ধ ছাড়া বিশ্ববাসীর সম্মুখে অন্যতম যে গুরুতর সমস্যা, তা হচ্ছে জনসংখ্যাস্ফীতি।” ম্যাকনামারার এ বক্তব্যের বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। নিচে এ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো: 

১। খাদ্য উৎপাদন, বণ্টন ও ভোগের ক্ষেত্রে চাপ: ১৬ কোটি মানুষের এদেশে মাথাপিছু ভূমির পরিমাণ মাত্র ০.২০ একর। বস্তুত স্বল্পায়তনের এ দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের খাদ্যের যোগান দেয়া খুব সহজ কাজ নয়। অধিক ও বহুমুখী উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য ঘাটতি সাময়িকভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হলেও বাংলাদেশে খাদ্যের উপর বাড়তি চাপ একটি অনিবার্য বাস্তবতা। 

২। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে ঘাটতি: বিপুল জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশেরই বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাদের সুপেয় পানি, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রায়ই অপুরণীয় থেকে যায়। 

৩। দারিদ্র: বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৩১.৫ শতাংশ মানুষ দরিদ্র, এর মধ্যে হতদরিদ্র হচ্ছে প্রায় ১৭.৬ শতাংশ মানুষ (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৬)। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে জনসংখ্যাস্ফীতি। অধিক মানুষের শিক্ষা, দক্ষতার অভাবে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান হয় না। তাদের জীবনমান নিম্নমুখী এবং মৌলিক চাহিদাও থেকে যায় অপূর্ণ। ফলে আয়তনের তুলনায় অধিক জনসংখ্যাই বাংলাদেশের দারিদ্র বিমোচনের প্রধান অন্তরায়। 

৪। বেকারত্ব বৃদ্ধি: বাংলাদেশে কর্মক্ষম যুবকের একটি বড় অংশ (প্রায় ২৬ লক্ষ যুবক) প্রত্যাশিত কাজ থেকে বঞ্চিত। দেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হারে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। অধিক জনসংখ্যাই বেকারত্বের প্রধান কারণ। 

৫। দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সমস্যা: কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ অধিকতর ব্যয়বহুল এবং সুযোগও সীমিত। ফলে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীকে আধুনিক ও কারিগরী শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা সত্যিই কঠিন।

৬। গৃহহীন ভাসমান মানুষের সংখ্যাধিক্য: ১৬ কোটি মানুষের সবার জন্য নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করা দুঃসাধ্য। শিল্পায়ন ও নগরায়ন প্রতিনিয়ত গ্রামের মানুষকে শহরমুখী করছে। কিন্তু তাদের জন্য প্রত্যাশিত কাজ এবং নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। ফলে শহরে বস্তি এবং ভাসমান মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

৭। চিকিৎসা সেবায় নাজুকতা: দেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার জন্য দক্ষ জনবল, অবকাঠামো, আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ কাক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

৮। আবাদি জমি হ্রাস পাচ্ছে: বাড়তি জনসংখ্যার জন্য প্রতি বছর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, শিল্প কারখানা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য প্রচুর পরিমাণ আবাদি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার জমি ভাগ বাটোয়ারার কারণে জমির খণ্ডায়ন হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত আবাদি জমি হ্রাস পাচ্ছে। 

৯। পরিবেশ বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা: অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য বাড়িঘর নির্মাণ, রাস্তাঘাট তৈরি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিপুল যানবাহন, গাছপালা কর্তন ও বনাঞ্চল ধ্বংস করার কারণে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। মানুষের বিপুল চাহিদা অপরিকল্পিত শিল্পায়নকে উৎসাহিত করছে। মানুষের লোভ ও অসচেতনতায় বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণি ও পশুপাখি। ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

১০। সামাজিক বিশৃঙ্খলা: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সম্পদ ও সুযোগ বৃদ্ধি পায় না। ফলে মানুষের চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণে সৃষ্টি হয় বাড়তি প্রতিযোগিতা। পরিণতি হিসেবে দেখা যায়, পারিবারিক ও সামাজিক অশান্তি, বিশৃঙ্খলা, কলহ-বিবাদ, খুন, মারামারি, পারিবারিক বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, হতাশা, সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি।

১১। যাতায়াত ব্যবস্থায় অত্যধিক চাপ: অতিরিক্ত জনসংখ্যার ফলে যাতায়াত ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমার ইত্যাদিতে স্বাভাবিক চলাচল দিন দিন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বিদ্যমান পরিবহন ব্যবস্থা এবং সড়ক-মহাসড়কগুলো বিপুল জনসংখ্যার চাপ নিতে পারে না। ফলে মানুষকে অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *