জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরের উপায়
বিশ্বের অনেক দেশই অধিক জনসংখ্যাকে আর সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করছে না। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। বাংলাদেশেও জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরের নানা উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে। বস্তুত বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন বা ‘উন্নয়ন-মিরাকল’র মূলে রয়েছে বিশাল জনশক্তি। দেশের অভ্যন্তরে পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বিশাল শ্রমশক্তি এবং বিদেশে কর্মরত প্রায় ৮০ লক্ষ কর্মজীবীর প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল করছে। দারিদ্র বিমোচন কেশৗলপত্র প্রকল্প, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্ৰ (এমডিজি) এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)- এর মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনের ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দারিদ্র মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে নানারকম সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচি একদিকে যেমন দারিদ্র্য নিরসনে ভূমিকা রাখছে, তেমনি নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করছে। ফলে এখন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নয়, জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশাল শ্রমশক্তি আগামী এক দশকে দেশের চেহারা পাল্টে দিবে।
জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরের অনেকগুলো উপায় রয়েছে। যেমন:
ক) তরুণ প্রজন্মকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা;
খ) কারিগরী ও কর্মমুখী শিক্ষার বিস্তার;
গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
ঘ) উদীয়মান শিল্প-কারখানার সাথে সঙ্গতি রেখে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করা;
ঙ) পোশাক শিল্পের জন্য দক্ষ ডিজাইনার ও প্রশিক্ষিত কারিগর তৈরি করা; |
চ) দেশব্যাপী কারিগরী কলেজ, ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা এবং তরুণদেরকে চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন ট্রেডে সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা ও স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদান;
ছ) শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত সবার জন্য উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র তৈরি করা।
জ) প্রশিক্ষণ, স্বল্পসুদে ঋণদান এবং অন্যান্য পৃষ্ঠপোশকতা দিয়ে দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করা; যারা কেবল নিজেদের নয়, অন্যেরও কাজের ব্যবস্থা করে দিবেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions