যৌতুক কি
যৌতুক বাংলা শব্দ। এর প্রতিশব্দ পণ। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে "Dowry"। প্রচলিত অর্থে বরপক্ষ কনেপক্ষ থেকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যা কিছু আদায় করে থাকে তার নাম যৌতুক। বাংলাপিডিয়ায় বলা হচ্ছে, “বিবাহের চুক্তি অনুসারে কন্যাপক্ষ বরপক্ষকে বা বরপক্ষ কন্যাপক্ষকে যে সম্পত্তি বা অর্থ দেয় তাকে যৌতুক বা পণ বলে” । যৌতুক আমাদের জাতীয় জীবনে একটি নিমর্ম ও কলঙ্কজনক অভিশাপ। এটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে বিস্তার লাভ করেছে। প্রতিনিয়ত অসংখ্য নারী এ ঘৃণ্য ব্যাধির শিকার হচ্ছে। এমনকি এর চরম পরিণতিতে অনেকে মৃত্যুর শিকার হচ্ছে বা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। ইসলাম যৌতুকের মতো অসামাজিক লেন-দেন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
যৌতুক প্রতিরোধে ইসলাম নির্দেশিত করণীয় দিকসমূহ নিম্নরূপ-
ইসলামি মূল্যবোধের চর্চা : ইসলাম কোনোভাবেই যৌতুক সমর্থন করে না। ইসলাম এটাকে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ ও অবৈধ উপায়ে অর্থ লেন-দেন হিসেবে গণ্য করে। ইসলামের এই মূল্যবোধ সম্পর্কে সমাজের প্রতিটি মানুষকে সচেতন করতে পারলে যৌতুক অনেকাংশে কমে যাবে ।
যৌতুকের স্থলে দেনমোহর : ইসলামে যৌতুকের আদৌ স্থান নেই। মোহর আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত স্ত্রীর জন্য একটি বিশেষ উপঢৌকন। মোহর প্রদান স্বামীর জন্য বাধ্যতামূলক। এটা স্ত্রীর আবশ্যকীয় প্রাপ্য, একটি বিশেষ অধিকার। নারীদের মোহরানা যথাযথভাবে আদায়ের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,
وَأتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً
“আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়ে দাও।” (সূরা নিসা ৪: ৪ )
গণসচেতনতা : শিক্ষিত পরিবারের চেয়ে অশিক্ষিত পরিবারে যৌতুকের চর্চা বেশি হতে দেখা যায়। তাই শিক্ষা ব্যবস্থায় যৌতুক বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করলে যৌতুক কমে যাবে। এ লক্ষ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌতুক যে অত্যন্ত জঘন্য, অভিশপ্ত ও অনৈসলামিক প্রথা এ বিষয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষাদান করতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions