Home » » বায়ুমণ্ডল কি

বায়ুমণ্ডল কি

বায়ুমন্ডল কাকে বলে / বায়ুমণ্ডল কি / Atmosphere

বায়ুমণ্ডল কি

পৃথিবীর চারপাশে বেষ্টন করে হাজার হাজার কিলোমিটার যে পুরু বায়ুর সমূদ্র রয়েছে তাকে বায়ুমন্ডল বলে। এটি পৃথিবীর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষন শক্তির আকর্ষণে বায়ুমন্ডল পৃথিবীর সাথে লেগে আছে। বায়ুমন্ডল বিভিন্ন উপাদান দিয়ে গঠিত, এগুলোর পরিমাণের হ্রাস বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রারও হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। ফলে বায়ুমন্ডলের উপর পৃথিবীর পরিবেশ বহুলাংশে নির্ভরশীল। এ কারণে মানুষেরই অস্থিত্বের জন্য বায়ুমন্ডলের গভীরতা, বৈশিষ্ট্য এবং ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা লাভ করা অতীব গুরুত্বপূর্ন।


বায়ুমন্ডলের গুরুত্ব

অদৃশ্য হলেও বায়ুমন্ডল প্রাণীর অস্তিত্বের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। স্থানভেদে বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন উপাদানগত তারতম্য মানুষের কর্মকান্ডকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। বর্তমানে মানুষ তার পরিবেশ নিয়ে যতটা উদ্বিগ্ন। এক যুগ আগেও তা লক্ষ্য করা যায়নি। বায়ুমন্ডলীয় ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞানীরা পূর্বের চেয়ে অনেক বেশী সচেতন। বিজ্ঞানীরা জেনেছেন, বায়ুমন্ডলীয় গঠণ উপাদানের সামান্য পরিবর্তন মানুষের অস্তিত্বের জন্য এক মারাত্মক হুমকি। পৃথিবীর পরিবেশীয় সম্পদ অফুরন্ত নয়। এ সম্পদের যথেষ্ট ব্যবহারের ফলে বিগত কয়েক দশকে পানি ও মাটির সাথে বায়ুমন্ডলও ব্যাপকভাবে দূষিত হয়েছে। পৃথিবীতে মানুষের কর্মকান্ড যেমন, ব্যাপক হারে গাছ-পালা কেটে ফেলা, কলকারখানার ধোঁয়া, জ্বালানী তেল, কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানো থেকে নির্গত ধোঁয়া, এবং বিষাক্ত গ্যাস বায়ুমন্ডলকে দূষিত করে তুলেছে। অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, বায়ুমন্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ওজনস্তর যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীর প্রাণীকুলকে রক্ষা করে তার পুরুত্ব কোথাও মারাত্মক হ্রাস পেয়েছে এবং কোথাও অনুপস্থিত। তাছাড়া, বায়ুমন্ডলীয় উপাদান, কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে বায়ুমন্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা আশংকা করেন, বায়ুমন্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মেরু অঞ্চলে ও পার্বত্য অঞ্চলের বরফ কিছুটা গলে যাবে। এতে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে এবং ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা ও খরার মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।


বায়ুমন্ডলের উপাদান

বায়ুমন্ডল বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের সংমিশ্রণে গঠিত। এই গ্যাসীয় মিশ্রণ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৮০ কি. মি. উচ্চতা পর্যন্ত প্রায় সমান। জলীয় বাষ্প, ধুলিকণা ব্যতীত বিশুদ্ধ বায়ুর ৯৯ শতাংশই নাইট্রোজেন (৭৮%) এবং অক্সিজেন (২১%) দ্বারা গঠিত। এ দুটি গ্যাস বায়ুমন্ডলের অন্যতম উপাদান এবং প্রাণীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও আবহাওয়ার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে উভয়ের ভূমিকা কম। শুষ্ক বায়ুর বাকি ১ শতাংশ প্রধানত আরগন ও অত্যন্ত কম মাত্রার অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস দ্বারা গঠিত। এ সমস্ত গ্যাসের মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড মাত্র ০.০০৩ শতাংশ হলেও এটি বায়ুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ এটি পৃথিবী থেকে বিকিরণকৃত তাপশক্তি শোষণের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলকে উষ্ণ রাখে।

বায়ুমন্ডলের-উপাদান

বায়ুমন্ডলের-উপাদান

কার্বন ডাই অক্সাইড (Co2) 

যদিও শুষ্ক বায়ুতে মাত্র ০.০০৩ শতাংশ থেকে ০.০৪ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে তবুও এর ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কার্বন ডাই অক্সাইড মূলত: দুটি বিশেষ ক্রিয়ায় অবদান রাখে • সালোক সংশ্লেষণ ও  তাপশক্তি শোষণ ।


বায়ুর আর্দ্রতা : বায়ু কখনই জলীয়বাষ্প বিহীন থাকে না। বায়ুমন্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণগত তারতম্য আছে। জলীয়বাষ্প আবহাওয়া এবং জলবায়ুকে নিম্নলিখিতভাবে প্রভাবিত করে

১. জলীয়বাষ্প বায়ুমন্ডলের একমাত্র উপাদান যা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঘনিভূত হয়। তাছাড়া, বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ, বারিপাতের ধরণ ও পরিমাণ নির্ধারণ করে। 

২. সূর্যালোক থেকে আগত তাপ এবং পৃথিবী থেকে বিকিরণকৃত তাপ উভয় শক্তিই শোষণ করে বায়ুর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে ।  

৩. সুপ্ত তাপ বা সঞ্চিত শক্তির উৎস যখন তরল পদার্থ বা বরফ জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়, তখন তাপশক্তি ব্যয় হয়। বায়ু মন্ডলের ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডাে, বজ্রপাতের অন্যতম শক্তির উৎস বাষ্পীয় স্থিতি শক্তি।


বায়ুর ধুলিকণা 

বায়ুমন্ডলে ধুলিকনা বিদ্যমান। নগর বা শিল্প এলাকায় নিম্ন বায়ু মন্ডলে প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে ১০০,০০০ ধূলিকণার বেশী থাকতে পারে। ধূলিকণা আবহাওয়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যেমন: ধূলিকণা সূর্যালোক প্রতিফলিত করে, রশ্মি বিচ্ছুরন ঘটায় এতে আকাশ নীলাভ মনে হয়। সূর্যালোকের ওপর ধূলিকণার প্রভাবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তে লাল বাদামী রঙের বৈচিত্র্য দেখা যায় । আগ্নেয়ক্রিয়তার ফলে উদগিরিত পদার্থ যেমন ধূলিকণা ভস্ম দূর আকাশে বহুদিন ঢেকে থাকায় সূর্যলোক প্রবেশ করতে পারায়, তাপমাত্রার হ্রাস ঘটে। শহরের বিভিন্ন যান্ত্রিক কর্মকান্ডের উপজাত হিসেবে কিছু বিশেষ ধরণের অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা, লবনকনা, কয়লা ও জ্বালানি তেলের ধোঁয়া ও সালফার ডাই অক্সাইডকে ভিত্তি করে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়।


ওজনস্তর

এটি বায়ুমন্ডলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি অক্সিজেনের একটি পরমানু দ্বারা গঠিত। পৃথিবীতে বসবাসকারী সব প্রানীর জন্য ওজনস্তর গুরুত্বপূর্ন। কারণ ওজনস্তর সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি শোষন করে পৃথিবীকে প্রানীর বসবাস উপযোগী করে।


বায়ুমন্ডলের গভীরতা

বায়ুমন্ডলের গভীরতা নির্ণয় করা খুবই কঠিন। তবে নানা প্রকার অনুমাণের দ্বারা বায়ুমন্ডলের গভীরতার কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ উল্কা ও মেরুজ্যোতির কথা ধরা যায়। যেমন, উল্কা বায়ুমন্ডলে পৌঁছালে জ্বলে ওঠে। বায়ুমণ্ডল উর্ধ্বে প্রায় ৮৮৫ কি. মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। মেরু প্রদেশে ১২৮৭ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। মেরু প্রদেশে ১২৮৭ কি.মি. উপরে মেরুজ্যোতি দৃষ্ট হয়। এতে অনুমান করা যায় যে ভূ-পৃষ্ঠের ১২৮৭ কি. মি. উর্ধ পর্যন্ত বায়ুমন্ডল বিস্তৃত। বায়ুমন্ডলের গভীরতা যাই হোক না কেন, এটা নিশ্চিত যে বায়ুর ৯৭% ভাগ পদার্থই বায়ুমন্ডলের নিম্নভাগের ২৯ কি.মি. এর মধ্যে বিস্তৃত।


বায়ুমন্ডলের বৈশিষ্ট্য 

বায়ুর তাপ ও চাপের বিষয় বুঝতে হলে বায়ুর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কিছু জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। বায়ুর বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ

১. বায়ু উষ্ণ হলে প্রসারিত এবং হালকা হয়। শীতল হলে সংকুচিত এবং ভারী হয়। 

২. বায়ুর ওপর চাপের আধিক্য হলে এটি সংকুচিত হয়, ভারি ও উষ্ণ হয় এবং চাপ হ্রাস পেলে প্রসারিত, হালকা ও শীতল হয়। 

৩. জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু বিশুদ্ধ বায়ু অপেক্ষা লঘু। 

৪. বায়ু সর্বদা উচ্চ চাপ থেকে নিম্ন চাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। 

৫. উষ্ণ বায়ু শীতল বায়ু অপেক্ষা বেশী জলীয় বাষ্প ধারণ করে। তাই উষ্ণ বায়ু হঠাৎ শীতল হলে বৃষ্টি হয়। 

৬. ধূলিকণাপূর্ণ বায়ুর তাপধারণ ক্ষমতা বিশুদ্ধ বায়ু অপেক্ষা অনেক বেশী।


বায়ুমন্ডলের উৎপত্তি (Origin of Atmosphere)

পৃথিবীর বায়ুমন্ডল একদিনে অকস্মাৎ সৃষ্টি হয়নি। এর সৃষ্টির ইতিহাস পৃথিবীর উৎপত্তির সাথে জড়িত। একটি মতবাদে ধারণা করা হয় পৃথিবী সৃষ্টির আদি পর্যায়ে অতি উত্তপ্ত ম্যাগমা থেকে পূর্বের দ্রবিভূত কার্বনডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন, এবং জলীয়বাষ্প ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে। এ সমস্ত গ্যাস একটি বায়ুমন্ডল গঠণ করে। সম্ভবত সে সময়কার বায়ুমন্ডলের গঠন বর্তমান আগ্নেয়গিরি থেকে বের হয়ে আসা গ্যাসীয় উপাদানের মত ছিল (Cole 1975) । ৬০-৭০% জলীয়বাষ্প; ১০-১৫% কার্বনডাই-অক্সাইড; ৮-১০% নাইট্রোজেন এবং বাকী অংশ সালফার যৌগ। পৃথিবী ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে থাকে এবং জলীয় বাষ্প থেকে মেঘের সৃষ্টি করে। এ মেঘ থেকে বৃষ্টি হয় কিন্তু তা উর্ধ্ব। বায়ুমন্ডলেই থেকে যায়। কারণ বৃষ্টির ফোটা উত্তপ্ত পৃথিবীতে পৌঁছবার পূর্বেই তা আবার বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং দীর্ঘ সময়ব্যাপী এই ধারা চলতে থাকে। ফলে ঘন মেঘের সৃষ্টি হয় যা পৃথিবীকে হাজার হাজার বছর ঢেকে রাখে। অবশেষে  পৃথিবী যখন যথেষ্ঠ ঠান্ডা হয় তখন অবিশ্রান্ত বৃষ্টি শুরু হয় এবং তা প্রায় ৪০,০০০ বছর স্থায়ী হয় বলে অনুমান করা হয়। এ বৃষ্টিপাতই বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড পৃথিবীতে নিয়ে আসে।

অক্সিজেন সম্ভবত সবশেষে বায়ুমন্ডলে যোগ দিয়েছে। একটি মতবাদ অনুযায়ী জলীয়বাষ্প যখন পরিচলন প্রক্রিয়ায় উর্ধ্ব বায়ুমন্ডলে পৌঁছে তখন সূর্যের বেগুনি রশ্মি পানির অনু ভেঙে দেয়। ফলে এ অক্সিজেন ও হাইড্রাজেন পরমাণুতে পরিণত হয়। হাইড্রজেন পরমাণু বায়ুমন্ডল ত্যাগ করে এবং অক্সিজেন পরমাণু সমূহ অক্সিজেন অনু গঠণ করে। বিজ্ঞানীদের ধারণা গত ২০০ কোটি বছর বায়ুমন্ডলের তেমন উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন হয়নি। শুধুমাত্র অক্সিজেনের মাত্রা ধীরে ধীরে কিছুটা বেড়েছে।


বায়ুমণ্ডলের স্তর

বায়ুমন্ডলীয় স্তর (Atmospheric Layers) 

বায়ুমন্ডলের গঠনকারী উপাদানের বৈশিষ্ট্যের (যেমন- চাপ, ঘনত্ব, উষ্ণতা) ভিত্তিতে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে একে চারটি স্তরে ভাগ করা যায়। যথা- ট্রপোমন্ডল, স্ট্রাটোমন্ডল, মেসোমন্ডল ও তাপমন্ডল)।

ট্রপোমন্ডল (Troposphere) :

এটি বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর। ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন হওয়ার এ স্তর জীবজগতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ স্তরের গভীরতা মেরু এলাকায় প্রায় ৮ কি.মি. এবং নিরক্ষীয় এলাকায় ১৬ থেকে ১৯ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি ১.৫ কি.মি. থেকে ২ কি.মি. উচ্চতায় ভূমির বন্ধুরতার জন্য বায়ু সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে এ অংশে বায়ু খুব উপরে উঠানামা করে। এ স্তরের জলীয়বাষ্প এবং ধুলিকণা অশান্ত বায়ুর সাথে মিশ্রিত হয়ে মেঘ, ঝড় প্রভৃতির সৃষ্টি করে ও আবহাওয়ার বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটায়। ঝড় ও আবহাওয়ায় পরিবর্তন ট্রোপোমন্ডলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। নিম্নবায়ুমন্ডলের নীচ থেকে ওপরের দিকে তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পায়। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুমন্ডলের এ উষ্ণতা হ্রাসের হার প্রতি কি.মি.-এ ৬.৫° সেলসিয়াস। একে স্বাভাবিক তাপ হ্রাস হার (Normal lapse rate) বলে। বায়ুমন্ডলের এ তাপহাস বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র ট্রপোমন্ডলেই ঘটে। এ স্তরের উপরে তাপহাস হার শূন্য বা ঋনাত্মক। ট্রপোমন্ডলে বায়ুর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশী। এর উপরের স্তরসমূহে ঘনত্ব কমতে থাকে।


স্ট্রাটোমন্ডল (Stratosphere) :

স্ট্রাটোমন্ডল দ্বিতীয় বায়ুমন্ডলীয় স্তর যা ওপরের দিকে প্রায় ৫০ কি. মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। এ স্তরে ২০ কি. মি. উচ্চতা পর্যন্ত তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন হয় না। এর পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং স্ট্রাটোবিরতী (প্রায় ৫০ কি. মি.) পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বায়ুমন্ডলীয় ওজন গ্যাসের বেশীরভাগ এ স্তরেই অবস্থিত। ওজন গ্যাস সূর্যের স্ট্রাটোমন্ডলে জলীয়বাষ্প নেই। স্ট্রাটোবিরতি এ স্তরের শেষ নির্ধারণ করে।


মেসোমন্ডল (Mesosphere) : 

স্ট্রাটোবিরতির ওপরের স্তর থেকে মেসোমন্ডল শুরু। এ স্তর ওপরের দিকে প্রায় ৮০ কি. মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। মেসোমন্ডলের শুরু থেকেই উষ্ণতা হ্রাস পেতে থাকে এবং মেসসাবিরতিতে প্রায় ৯০° সেলসিয়াসে নেমে আসে। এ স্তরে বায়ুর চাপ অত্যন্ত ক্ষীণ যা ৫০ কিলোমিটারে ১ মিলিবার থেকে ৯০ কিলোমিটারে ০.০১ মিলিবারে দাঁড়ায় । মেসোমন্ডলের শেষ সীমা মেসোবিরতি।


তাপমন্ডল (Thermosphere) : 

মেসোবিরতির ওপরের স্তরকে তাপমন্ডল বলে। এ স্তরের ওপরের সীমানা অনির্ধারিত। তাপমন্ডলের ১০০ কি. মি. থেকে ৩০০ কি. মি. উচ্চতায় অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন পরমাণু অত্যন্ত খাটো তরঙ্গ মাপের

সৌরশক্তি শোষণ করায় উষ্ণতা প্রায় ১০০০°c পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই স্তরে অক্সিজেন অনুগুলো ভেঙে বিদ্যুৎ যুক্ত কণায় পরিণত হয়। বিদ্যুত্যুক্ত কণাকে আয়ন (Ion) বলে। তাপমন্ডলে এ আয়নিত অংশ আয়নমন্ডল (Ionosphere) নামে পরিচিত। আয়নমন্ডল মূলত মেসোমন্ডলের উর্ধাংশ থেকে তাপমন্ডলের নিম্নাংশ (৫০-১০০ কি. মি পর্যন্ত) পর্যন্ত সম্প্রসারিত। 

আয়নমন্ডলে পৃথিবীর চুম্বকীয় আকর্ষণের টানে বিদ্যুত্যুক্ত কণা জড়াে হয়ে উভয় গোলার্ধে মেরু আলো (Auroras) সৃষ্টি করে। উত্তর গোলার্ধের মেরু আলো মেরু বোরিয়ালিস (Aurora Borealis) এবং দক্ষিন গোলার্ধে মেরু আলো মেরু অষ্ট্ৰালিস নামে পরিচিত। উত্তর গোলার্ধে এর প্রভাবে রাতের আকাশে আলোর বর্ণালী বা আলোক প্রভা দেখা যায়। 

আয়নমন্ডলের ওপরের অংশ এক্সোস্ফিয়ার ও চুম্বকীয়মন্ডল নামে দুটি স্তরে বিভক্ত। এক্সোস্ফিয়ার প্রধানত অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, হিলিয়াম পরমাণু দ্বারা গঠিত। এটি প্রায় ৯০০ কি. মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। এই স্তরে অনুর ঘনত্ব এত কম যে অনুসমূহের পারস্পরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা থাকে না। এক্সোস্ফিয়ার বায়ুমন্ডলের বহি:সীমা নির্ধারণ করে। ধারণা করা হয় চুম্বকীয় মন্ডল আরও অনেকখানি বাইরের দিকে বিস্তৃত এবং বাইরের সীমানা চুম্বকীয়বিরতি নামে পরিচিত। চুম্বকীয়মন্ডল পৃথিবীর পরিবেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকার সাধন করে থাকে। এটি পৃথিবীর আবাহওয়া মন্ডলকে সূর্য থেকে আগত অত্যন্ত শক্তিশালী বিদ্যুতায়িত বিকিরণ থেকে রক্ষা করে। এ বিদ্যুতায়িত বিকিরণ সৌর ঝড় (Solar Wind) হিসেবে (অত্যন্ত দ্রুত গতিতে) চুম্বকীয়মন্ডলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বহি:বিভাগ দিয়ে পৃথিবী ছাড়িয়ে যায়। চুম্বকীয়মন্ডল না থাকলে সূর্যের এ বিদ্যুতায়িত বিকিরণে এ পৃথিবীর সমস্ত জীবজগৎ ধ্বংশ হয়ে যেত।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *